গাজীপুর সদরের বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা কারখানার সামনে গতকাল বৃহস্পতিবারও ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে অবস্থান নেন। তাদের কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। তবে বড় কোনো সংঘাত হয়নি। বেক্সিমকোর বন্ধ ১৬ কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক বুধবার চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে যে তাণ্ডব চালান, তার রেশ দেখা যায়।
গাজীপুর শিল্প এলাকা গতকাল ছিল থমথমে। দিনভর গাজীপুর এবং আশুলিয়া শিল্প এলাকায় ছিল বাড়তি সতর্কতাও।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন তারা। কর্মহীন শ্রমিকদের কেউ উস্কে দিয়েছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
এদিকে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রামীণ ফেব্রিকসের জেনারেল ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম তুহীন কাশিমপুর থানায় ১৪ শ্রমিকের  নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গতকাল মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শ্রমিকদের বেশির ভাগ আত্মগোপন করেন।

আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গতকাল মহানগরের জিরানি বাজার, চক্রবর্তী ও গ্রামীণ ফেব্রিকস কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও থানা-পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসব এলাকায় দিনভর টহল দেন।

গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর সারাবো এলাকার বেক্সিমকোর ১৬ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের চক্রবর্তী মোজার মিল এলাকায় বুধবার বিকেলে জড়ো হন হাজারো শ্রমিক। এক পর্যায়ে তারা সড়কে শুয়ে যানবাহন চলাচল আটকে দেন। এক পর্যায়ে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে হামলাকারীরা গ্রামীণ ফেব্রিকস কারখানায়ও ভাঙচুর চালান এবং কারখানার নিচতলায় আগুন দেন।

মামলার বাদী ও গ্রামীণ ফেব্রিকসের জেনারেল ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম তুহীন সমকালকে বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে তাদের কারখানার ১৮ কোটি টাকার মালপত্র পুড়ে গেছে। মামলায় খোরশেদ আলম নামে এক শ্রমিককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।” 

উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।” 

তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।” 

তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।” 

উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।” 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”

পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।” 

তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। 

রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ শুরু 
  • বিএনপির শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল
  • সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’