ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে। 

যদিও গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে আভাস দেন ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলোচনায় বসতে রাজি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে ট্রাম্প অনেকবার ঘোষণা করেছেন যে তিনি তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি করবেন। তবে তার উপদেষ্টারা এখন স্বীকার করছেন যে যুদ্ধের সমাধান হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। 

দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে অংশ নিয়ে বুধবার ট্রাম্প বলেন, “আমি সত্যিই চাই দ্রুতই রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করে এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে।” 

হোয়াইট হাউসে এর পরের দিন ফের ট্রাম্প বলেন, “আমি শুনেছি, পুতিন আমার সাথে দেখা করতে চান। আমি অবিলম্বে তার সাথে সাক্ষাত করব।”

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ট্রাম্প। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, পুতিন যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় বসতে রাজি না হন, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবেন কি না।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘খুব সম্ভবত।’

বরাবরের মতোই ট্রাম্প গতকালের সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তিনি যদি ক্ষমতায় থাকতেন, তাহলে এ যুদ্ধই বাধত না।

ঢাকা/নাছিম/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ