রাজধানীসহ সারা দেশেই শীতের তীব্রতা গতকাল থেকে বেড়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে কাঁপন ধরিয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার পর রাজধানীতে কুয়াশা কেটে সূর্যের আলো দেখা যায়। তবে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সূর্য দেখা যায়নি। আজ উত্তরবঙ্গের দুই জেলায় বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ।

গতকাল রাজধানীতে তাপমাত্রা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। দেশের গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও কমে যায়। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা থাকতে পারে। পরদিন শনিবার থেকে তাপমাত্রা আরও কমে শীত বাড়তে পারে। দু-একটি স্থানে বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। ২৮ জানুয়ারির পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সমকালকে বলেন, জানুয়ারির পর থেকেই আস্তে আস্তে শীত বিদায় নেবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হয়েছে, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে, ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও সেখানে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। 

গত বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে, ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেখা যাচ্ছে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধারবাহিকভাবে কমে আসছে।

এই অবস্থা কয় দিন চলতে পারে—এমন প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, আগামীকাল দেশের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে এর পরদিন থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ অবস্থা চলতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে এরপর তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।

আজ দেশের যে দুই জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে, সেগুলো হলো সিরাজগঞ্জ ও পঞ্চগড়। আজ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

যদি কোনো এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সেই এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে বলে ধরা হয়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আর অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ তখনই হয়, যখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আজ দুই জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। চলতি মাসে একবারই মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শীতের তীব্রতা এখন পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম। গত ডিসেম্বর মাসেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক সমকালকে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে দিনের ব্যাপ্তি বেড়ে যায়, ফলে তাপমাত্রা বাড়বে। তবে ফেব্রুয়ারিতে শৈত্যপ্রবাহ আসবে কী না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স লস য় স দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ