মধুসূদনের জন্মদিন উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন
Published: 24th, January 2025 GMT
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী মধুমেলা।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
মেলা উপলক্ষে যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর আলম সিদ্দিকী, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে তথ্য মেলা উদ্বোধন
গাছিদের গুড়-পাটালির পসরায় জমজমাট মেলা
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো মধুসূদনের ভক্তের উপস্থিতিতে এবারও মুখরিত হয়ে উঠেছে কপোতাক্ষ নদের পাড়। কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ পাড়, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বুড়ো কাঠবাদাম গাছতলা, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মেলা প্রাঙ্গণে ইতোমধ্যে মধুভক্তদের পদচারণা শুরু হয়েছে। মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এলাকার মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
এবারের মধুমেলায় দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য মধুমঞ্চে কেশবপুর ও যশোরের শিল্পী গোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের পরিবেশনা রয়েছে। পাশাপাশি সার্কাস, জাদু প্রদর্শনীর আয়োজন রয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়া কুটির শিল্পসহ গ্রামীণ পসরা ও কৃষিমেলাও থাকছে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর উপলক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।