নথিপত্রহীন অভিবাসনপ্রত্যাশী ধরতে ব্যাপক অভিযান
Published: 25th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্রহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নথিপত্রহীন ৫৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রেপ্তার এবং আরও কয়েকশ জনকে ফেরত পাঠিয়েছেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক আছেন। গত সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই এসব অভিযান চলছে, যা অব্যাহত থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের উদ্ধৃতি দিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্স এ খবর জানায়। সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ লেভিট বলেন, মার্কিন ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় বিতাড়ন অভিযান’ চলমান আছে। প্রেসিডেন্ট এটি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি তা রাখছেন।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের নিউওয়ার্ক সিটি মেয়র রাস জে বারাকা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি মার্কিন সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নথিপত্রহীনদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকদের আটক করছেন। তাদের কাছে কোনো পরোয়ানাও নেই। লোকজনকে বেআইনিভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে।
নিউওয়ার্কের মেয়র বলেন, তার শহরে বিভিন্ন কর্মস্থলে অভিযান চালাচ্ছেন আইসিইর প্রতিনিধিরা। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তাকেও আটক করা হয়; হয়রানি করে লোকজনের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সমালোচনায় মুখর হয়েছেন নিউজার্সির ডেমোক্র্যাট সিনেটর কোরি ব্রোকার ও অ্যান্ডি কিম। তারা এ অভিযান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এর আগে নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের পথ বন্ধ করে দেন ট্রাম্প। এ নিয়ে জাতিসংঘ বলছে, আশ্রয় চাওয়ার অধিকার ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত’। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক মুখপাত্র রাভিনা রামদাসানি এএফপিকে বলেন, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেরই তাদের আন্তর্জাতিক সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে। সেটি অবশ্যই হতে হবে মানবাধিকারের নিয়মনীতি মেনে।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে ২৩ জন গর্ভপাতবিরোধী কর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় গর্ভপাতবিরোধী র্যা লিতে বক্তব্য দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন। ট্রাম্পের গর্ভপাতবিরোধী নীতি নিয়ে খোদ রিপাবলিকানদের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
কেনেডি ও লুথার কিংয়ের হত্যানথি প্রকাশ চান ট্রাম্প
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি, তাঁর ভাই রবার্ট এফ কেনেডি ও মানবাধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোপন নথি প্রকাশের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন ইতিহাসে সাড়া জাগানো এ তিন হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট এখনও পুরোপুরি খোলেনি। বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, বহু মানুষ বছরের পর বছর ধরে এসব নথির জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছেন। সবকিছুই প্রকাশ করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কোন প্রক্রিয়ায় এগুলো প্রকাশ হবে, তা নির্ধারণ করা হবে।
এখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্র
আরও এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র। ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাটি। চিঠি পাওয়ার পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নোটিশ অনুযায়ী, দেশটি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ডব্লিউএইচও ছাড়বে। ডব্লিউএইচও থেকে কোনো সদস্য দেশ বেরিয়ে যেতে চাইলে এক বছরের নোটিশ দিতে হয়। এ ছাড়া ডব্লিউএইচওর কোনো পাওনা থাকলে তাও পরিশোধ করতে হয়। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে বর্ণনা করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: এবার কাদের বিপক্ষে, কবে খেলবে বাংলাদেশ?
আইসিসির বৈশ্বিক টেস্ট লিগ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। তিনটি সফল চক্র শেষে চতুর্থ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র, ২০২৫-২৭ মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা। মঙ্গলবার (১৭ জুন) গলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টেস্ট দিয়ে শুরু হবে চতুর্থ চক্রের খেলা।
প্রতিটি দল দুই বছরের মধ্যে ছয়টি সিরিজ খেলবে। যার তিনটি দেশের মাটিতে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। প্রতিটি সিরিজ হবে কমপক্ষে দুই টেস্টের। সর্বোচ্চ পাঁচটি টেস্ট থাকতে পারবে এক সিরিজে। এই সময়ে সিরিজ হবে মোট ২৭টি, যেখানে টেস্টের সংখ্যা ৭১টি। ২০২৭ সালের জুনে লিগ টেবিলের শীর্ষ দুই দলকে নিয়ে হবে ফাইনাল। শেষ তিন আসরের মতো ইংল্যান্ডেই বসবে সাতাশের ফাইনাল। সম্ভাব্য ভেন্যু লর্ডস।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে বাংলাদেশ সাতটি ম্যাচ খেলেছিল। জিততে পারেনি কোনো ম্যাচ। ড্র করেছিল একটি। হেরেছিল ছয়টি। পরের চক্রে ১২ ম্যাচে মাত্র ১ জয়, ১০টাতেই হার।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট পরিসংখ্যান
বাংলাদেশের বিপক্ষে হোম সিরিজে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দল ঘোষণা
সর্বশেষ টেস্ট চক্রে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ দেশের বাইরে, একটি দেশের মাটিতে জিতেছে। সব মিলিয়ে ১২ ম্যাচে চারটিতে জিতেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল। এছাড়া নিউ জিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদেশে হারিয়েছিল।
এবারের চক্রে বাংলাদেশ ১২টি ম্যাচ খেলবে। মোট ছয়টি সিরিজ। তিনটি দেশের বাইরে, তিনটি দেশের মাটিতে। দেশের বাইরে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার পর কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। কেননা দুটি সফরই শেষবারের দুই ফাইনালিস্টদের বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। এছাড়া ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে দেশের মাটিতে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই টেস্টের পর বাংলাদেশকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরের ম্যাচের জন্য ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পাকিস্তান ২০২৬ সালের মার্চে বাংলাদেশ সফর করবে। ২টি টেস্ট বাদেও ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে। ওই বছরের অক্টোবরে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আতিথেয়তা দেবে। নভেম্বর বাংলাদেশ যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়।
এরপর ২০২৭ সালে ইংল্যান্ড দুই টেস্টের জন্য আসবে ফেব্রুয়ারিতে। মার্চে বাংলাদেশ যাবে অস্ট্রেলিয়া সফরে। ২০০৩ সালের পর ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। আর এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্র শেষ হবে।
নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, ‘‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা গত বছর (চক্রে) ৭ নম্বরে শেষ করেছি। এই বছর তো অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে যেন ৪-৫-৬ নম্বরের মধ্যে আসতে পারি। তাহলে খুব ভালো হয়।”
“গত বছর (চক্রে) জয়ের হার সম্ভবত ৪৫ শতাংশ (আসলে ৪৫ পয়েন্ট ও ৩১.২৫ শতাংশ) ছিল। এখান থেকে যদি বাড়াতে পারি—৫০-৫৫ বা ৬০ শতাংশ হলে, একজন অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয়, ভালো একটা ফল হবে আমাদের।”– যোগ করেন শান্ত।
ঢাকা/ইয়াসিন