যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্রহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নথিপত্রহীন ৫৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রেপ্তার এবং আরও কয়েকশ জনকে ফেরত পাঠিয়েছেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক আছেন। গত সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই এসব অভিযান চলছে, যা অব্যাহত থাকবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের উদ্ধৃতি দিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্স এ খবর জানায়। সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ লেভিট বলেন, মার্কিন ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় বিতাড়ন অভিযান’ চলমান আছে। প্রেসিডেন্ট এটি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি তা রাখছেন।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের নিউওয়ার্ক সিটি মেয়র রাস জে বারাকা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি মার্কিন সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নথিপত্রহীনদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকদের আটক করছেন। তাদের কাছে কোনো পরোয়ানাও নেই। লোকজনকে বেআইনিভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে।

নিউওয়ার্কের মেয়র বলেন, তার শহরে বিভিন্ন কর্মস্থলে অভিযান চালাচ্ছেন আইসিইর প্রতিনিধিরা। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তাকেও আটক করা হয়; হয়রানি করে লোকজনের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সমালোচনায় মুখর হয়েছেন নিউজার্সির ডেমোক্র্যাট সিনেটর কোরি ব্রোকার ও অ্যান্ডি কিম। তারা এ অভিযান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের পথ বন্ধ করে দেন ট্রাম্প। এ নিয়ে জাতিসংঘ বলছে, আশ্রয় চাওয়ার অধিকার ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত’। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক মুখপাত্র রাভিনা রামদাসানি এএফপিকে বলেন, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেরই তাদের আন্তর্জাতিক সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে। সেটি অবশ্যই হতে হবে মানবাধিকারের নিয়মনীতি মেনে। 

এদিকে বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে ২৩ জন গর্ভপাতবিরোধী কর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় গর্ভপাতবিরোধী র্যা লিতে বক্তব্য দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন। ট্রাম্পের গর্ভপাতবিরোধী নীতি নিয়ে খোদ রিপাবলিকানদের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

কেনেডি ও লুথার কিংয়ের হত্যানথি প্রকাশ চান ট্রাম্প 
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি, তাঁর ভাই রবার্ট এফ কেনেডি ও মানবাধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোপন নথি প্রকাশের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন ইতিহাসে সাড়া জাগানো এ তিন হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট এখনও পুরোপুরি খোলেনি। বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, বহু মানুষ বছরের পর বছর ধরে এসব নথির জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছেন। সবকিছুই প্রকাশ করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কোন প্রক্রিয়ায় এগুলো প্রকাশ হবে, তা নির্ধারণ করা হবে। 

এখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্র 
আরও এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র। ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাটি। চিঠি পাওয়ার পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নোটিশ অনুযায়ী, দেশটি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ডব্লিউএইচও ছাড়বে। ডব্লিউএইচও থেকে কোনো সদস্য দেশ বেরিয়ে যেতে চাইলে এক বছরের নোটিশ দিতে হয়। এ ছাড়া ডব্লিউএইচওর কোনো পাওনা থাকলে তাও পরিশোধ করতে হয়। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে বর্ণনা করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ ধসের ঘটনায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ১০ তলা আবাসিক হলের অতিরিক্ত অংশের ছাদ ধসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

শুক্রবার (১ আগস্ট) ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের রবিবার (৩ আগস্ট) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাবির কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত

১০৯তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের পাশে নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলার সাথে যুক্ত অতিরিক্ত অংশের ছাদ ধসে পড়ে। এতে অন্তত ১২ জন শ্রমিক আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজন শ্রমিককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।

আরো পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে আহত ১২

এ ঘটনায় প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ