পর পর দুটি সিনেমার শুটিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছি: মিশুক মনি
Published: 25th, January 2025 GMT
মিশুক মনি। চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাঁর নির্মিত প্রথম ছবি ‘দেয়ালের দেশ’ দারুণ প্রশংসিত হয়। এবার তিনি নির্মাণ করছেন ‘কালবেলা’ নামে আরও একটি সিনেমা। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে শুটিংয়ের প্রস্তুতি। নতুন ছবি ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
প্রথম সিনেমা ‘দেয়ালের দেশ’ প্রশংসিত হওয়ায় পর ‘কালবেলা’ নামে নতুন সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেটার খবর কী?
প্রথম সিনেমার পর ‘কালবেলা’র নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ঢুকলাম এবং সেটা নিয়ে কাজ করতে করতে আমার পরবর্তী সিনেমার গল্পের লাইনআপ তৈরি হলো। তখন আমার মনে হলো, প্রেমের ত্রিলজি বানানোর একটা সৎ চেষ্টা করা যেতে পারে। সেটা নিয়েই কাজ চলছে।
জানতে চাইছি শুটিংয়ে নামার কাজটা কতদূর?
একটা সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রস্তুতি পর্বে আমার সময় বেশি লাগে। প্রি-প্রোডাকশনে সময় বেশি দিতে চাই যেন শুটিং-এ গিয়ে কোথায় কতটুকু কী প্রয়োজন তা পুরো ইউনিটের সবার জানা থাকে। শিল্পী নির্বাচন প্রায় গুছিয়ে এসেছে। লোকেশন রেকি চলছে। শুটিং ফ্লোরে গড়াতে একটা নির্দিষ্ট সময়ও ঠিক করা হয়েছে। আমরা সেই সময় অনুযায়ী শুটিং শুরু করব। যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রেমের ত্রিলজি করব, তাই একই সঙ্গে তৃতীয় সিনেমার কাজও চালাচ্ছি। পর পর দুটি সিনেমার শুটিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও ভালো করার চাপ কতটা অনুভব করছেন?
‘দেয়ালের দেশ’ রিলিজের পর ফিল্ম ফ্যাটার্নিটির মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকদের কাছে যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে যেমন ভালো লাগা কাজ করেছে একই সঙ্গে একটা চাপও অনুভব করেছি। মনে হয়েছে পরের কাজে আরও সৎ ও সতর্ক হতে হবে।
দেয়ালের দেশে দুটি সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন চিত্রায়ণ দেখিয়েছেন। কালবেলার গল্পের প্লট কী?
‘কালবেলা’ এর গল্পের প্লট কী তা তো এখানে বলতে পারছি না, তবে ওই যে শুরুতেই বললাম প্রেমের ত্রিলজি বানাতে চাই, তাই এটুকু বলতে পারি, কালবেলাও একটা প্রেমের গল্পই। তবে প্রেমের তো কত রকম অ্যাপ্রোচ থাকে! তা ছাড়া আমি সম্পর্কের গল্প সেলুলয়েডের পর্দায় পরিবেশন করতে চাই। প্রেম আর সংসার জীবনে সম্পর্কের কত ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম জায়গা থাকে, সেসবের গল্প বলতে চাই।
দ্বিতীয় সিনেমাতেও কি নায়ক-নায়িকা হিসেবে রাজ-বুবলী থাকছেন?
রাজ-বুবলীর সঙ্গে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ। একটা অদ্ভুত বন্ডিং তৈরি হয়েছে তাদের সঙ্গে। তবে আমি আগে গল্প লিখি এবং সেই গল্পের চরিত্র অনুযায়ী অভিনেতা-অভিনেত্রী নির্বাচন করি। তাই এই সিনেমাতেও রাজ-বুবলী থাকছে কিনা তা এখনই শেয়ার করতে পারছি না সিনেমার মার্কেটিং পলিসির জন্য।
প্রথম ছবি সরকারি অনুদানে নির্মিত। দ্বিতীয় ছবিও অনুদানপ্রাপ্ত। অনুদানের ওপর নির্ভরশীলতা কেন?
অনুদান হলো একটা প্রসেস। আমি সেই প্রসেসে আমার গল্প পিচ করেছি। অনুদান কমিটি মনে করেছেন এই গল্পে অনুদান দেওয়া জরুরি, তাই তারা বিচারবিশ্লেষণ করে অনুদান দিয়েছেন। তা ছাড়া আমি চলচ্চিত্র নির্মাতার পাশাপাশি একজন চলচ্চিত্র প্রযোজকও, আমার একটা ফিলোসফিক্যাল স্ট্র্যা টেজি হলো, পরপর তিনটা সিনেমা আমি নিজেই প্রডিউস করতে চাই। সেখানে নির্মাণ ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। ফলে আমার গল্পটা কনভিকশোনালি নির্মাণ করতে সহজ হবে। সে ক্ষেত্রে অনুদান পাওয়াতে বাকি টাকাটা আমার ইনভেস্ট করা সহজ হয়েছে।
অনুদান নিয়ে ভালো ছবি বানানো সম্ভব না, ধারণা ছিল। আপনি ভালো ছবি বানিয়ে দেখিয়েছেন। এটা কীভাবে সম্ভব হয়েছিল?
মূলত সিনেমাতে সরকার অনুদান দিলেও সেই সিনেমাটা তো আমার, আমার সৃষ্টি। নিজের সৃষ্টির ক্ষেত্রে হেলাফেলা করার কোনো কারণ দেখি না। তা ছাড়া আমি বিশ্বাস করি, আপনি যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে যতটা সৎ ও পরিশ্রমী হবেন সেই কাজ আপনাকে ততটা ফিডব্যাক দেবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।