সিদ্ধিরগঞ্জে জমি দখল মামলার আসামির সংবাদ সম্মেলন, ভুক্তভোগীর ক্ষোভ
Published: 25th, January 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে রাজিয়া সুলতানা নামক এক নারীর পৈত্রিক সম্পত্তি দখল মামলার প্রধান আসামি প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবার।
জানা যায়, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর ১ টার সময়ে দখল মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি গোলাম রাব্বানী (৭০) একটি সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
অথচ দোকানগুলো ভাঙ্গার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ও ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে রাব্বানীর ও তার ছেলে রুবেলের নির্দেশনায় ওই দোকান ভাঙ্গা হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালে (নাসিক) ২ নং ওয়ার্ডস্থ ধনুহাজী এলাকায় রাজিয়া সুলতানার জমির উপর নির্মিত ৩টি দোকান অবৈধভাবে দখল নিতে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন আসামি গোলাম রাব্বানীসহ তার সহযোগীরা।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী এই ঘটনায় অভিযুক্ত ভূমিদস্যু রাব্বানী ও তার ছেলে রুবেলের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত রেখে সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করান। এরপর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা খুজে পেয়ে রবিবার সকালে অভিযোগকে মামলায় রুপান্তরিত করে।
এদিকে মামলার এজাহারনামীয় আসামি হওয়া সত্বেও প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা বলেছেন, একজন আসামি মামলা হবার পরও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অথচ পুলিশ গ্রেফতার করছে না। ন্যায় বিচারের জন্য প্রশাসনের দারস্থ হয়ে যদি সঠিক বিচার না পাই কার কাছে যাবো? আমরা সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। আসামির সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।