এস এম তৌফিক আবির। তরুণ শ্রবণ ও বাক-বিশেষজ্ঞ। মানুষের শ্রবণ ও বাক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পেশাগত জীবন উৎসর্গ করেছেন। শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সহজলভ্য করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবির বর্তমানে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে ময়মনসিংহ কলেজ অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সেসের স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে। এ ছাড়া তিনি বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সল্যুশন পয়েন্টের ঢাকা শাখার ইনচার্জের দায়িত্বের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে অডিওলজিস্ট অ্যান্ড স্পিচ থেরাপি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্ত আছেন। 
আবির অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিষয়ে বিইউপির ফ্যাকাল্টি অব মেডিকেল স্টাডিজের পাইজার ইনস্টিটিউট থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রিসহ মালয়েশিয়া ও মুম্বাই থেকে ককলিয়ার ইমপ্লান্ট অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। 
এস এম তৌফিক আবির তাঁর কর্মজীবনের শুরু থেকেই শহরের সুবিধাবঞ্চিত ও গ্রামীণ অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কাছে সঠিক সেবা পৌঁছে দেওয়াকে নৈতিক দায়িত্ব মনে করে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও সৈয়দপুরে একটি এনজিওর উদ্যোগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শ্রবণ স্ক্রিনিং স্বাস্থ্য ক্যাম্পের আয়োজন করেন। এই ক্যাম্পে তিনি ও তাঁর সহযোগী দল দুই শতাধিক মানুষকে সেবা প্রদান করেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদেরও প্রশিক্ষণ দেন, যাতে তারা বাড়িতে তাদের সন্তানদের যথাযথভাবে সাহায্য করতে পারেন।
নিজের কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তৌফিক আবির বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা এমন একটি অধিকার, যা শহর বা গ্রামে সবার জন্য সমান প্রযোজ্য। সেই অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছি। আগামীতে দেশব্যাপী শ্রবণ স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজন, বিনামূল্যে শ্রবণ সেবাকেন্দ্র স্থাপন, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, পেশাজীবীদের অধিকার নিশ্চিত করা, সরকারি হাসপাতাল ও প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রগুলোতে প্রথম শ্রেণির পেশাজীবী হিসেবে অডিওলজিস্টের পদ সৃষ্টি করাসহ পুনর্বাসন চিকিৎসাসেবার অংশ হিসেবে অডিওলজি সেবা নিশ্চিতেও কাজ করতে চাই। এ ছাড়া অডিওলজিস্টের সমন্বয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের অডিওমেট্রিশিয়ানদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চাই।’
আবিরের এসব উদ্যোগ কেবলই একজন শ্রবণ ও বাক-বিশেষজ্ঞের দৃষ্টান্ত নয় বরং এটি নিশ্চয়ই আগামীতে সমাজ পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ