বিনামূল্যে শ্রবণ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া তরুণ
Published: 25th, January 2025 GMT
এস এম তৌফিক আবির। তরুণ শ্রবণ ও বাক-বিশেষজ্ঞ। মানুষের শ্রবণ ও বাক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পেশাগত জীবন উৎসর্গ করেছেন। শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সহজলভ্য করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবির বর্তমানে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধীনে ময়মনসিংহ কলেজ অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সেসের স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে। এ ছাড়া তিনি বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সল্যুশন পয়েন্টের ঢাকা শাখার ইনচার্জের দায়িত্বের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে অডিওলজিস্ট অ্যান্ড স্পিচ থেরাপি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্ত আছেন।
আবির অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিষয়ে বিইউপির ফ্যাকাল্টি অব মেডিকেল স্টাডিজের পাইজার ইনস্টিটিউট থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রিসহ মালয়েশিয়া ও মুম্বাই থেকে ককলিয়ার ইমপ্লান্ট অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন।
এস এম তৌফিক আবির তাঁর কর্মজীবনের শুরু থেকেই শহরের সুবিধাবঞ্চিত ও গ্রামীণ অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কাছে সঠিক সেবা পৌঁছে দেওয়াকে নৈতিক দায়িত্ব মনে করে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও সৈয়দপুরে একটি এনজিওর উদ্যোগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শ্রবণ স্ক্রিনিং স্বাস্থ্য ক্যাম্পের আয়োজন করেন। এই ক্যাম্পে তিনি ও তাঁর সহযোগী দল দুই শতাধিক মানুষকে সেবা প্রদান করেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদেরও প্রশিক্ষণ দেন, যাতে তারা বাড়িতে তাদের সন্তানদের যথাযথভাবে সাহায্য করতে পারেন।
নিজের কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তৌফিক আবির বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা এমন একটি অধিকার, যা শহর বা গ্রামে সবার জন্য সমান প্রযোজ্য। সেই অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছি। আগামীতে দেশব্যাপী শ্রবণ স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজন, বিনামূল্যে শ্রবণ সেবাকেন্দ্র স্থাপন, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, পেশাজীবীদের অধিকার নিশ্চিত করা, সরকারি হাসপাতাল ও প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রগুলোতে প্রথম শ্রেণির পেশাজীবী হিসেবে অডিওলজিস্টের পদ সৃষ্টি করাসহ পুনর্বাসন চিকিৎসাসেবার অংশ হিসেবে অডিওলজি সেবা নিশ্চিতেও কাজ করতে চাই। এ ছাড়া অডিওলজিস্টের সমন্বয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের অডিওমেট্রিশিয়ানদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চাই।’
আবিরের এসব উদ্যোগ কেবলই একজন শ্রবণ ও বাক-বিশেষজ্ঞের দৃষ্টান্ত নয় বরং এটি নিশ্চয়ই আগামীতে সমাজ পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। u
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এক্সিম ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত আমরা মানতে পারছি না
৪ জুন পাঁচ ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে হঠাৎ ডেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সভা করে। ব্যাংক পাঁচটি ছিল ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। সে সভায় ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে এ পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। আগে ছয় ব্যাংক একীভূত করার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ সেটা পাঁচ ব্যাংক হয়ে গেল। সভায় তিন ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আপত্তি করে। আমিও জানিয়ে দিয়েছি, পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে চার ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের তুলনা চলে না। ওই চারটি ব্যাংকের মালিকানা এস আলম গ্রুপের কাছে ছিল। এসব ব্যাংক যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এক্সিমের ক্ষত ততটা নয়।
আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়ে দিয়েছি, এক্সিম ব্যাংক কিছুদিনের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে তারল্য–সহায়তা নেওয়া হয়েছে, তা আগামী বছর থেকে ফেরত দেওয়া শুরু হবে। আমাদের ব্যাংক থেকে কোনো গ্রাহক টাকা তুলতে সমস্যায় পড়েননি। আমাদের আমদানি, রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের যে ব্যবসা আছে, তা অন্য চার ব্যাংকের চেয়ে বেশি। এসব ব্যাংক মিলে একটা সরকারি ব্যাংকে রূপান্তর করা হলে তা কোনোভাবেই ভালো হবে না। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না।
এক্সিম ব্যাংকের যতটা ক্ষতি গত সরকারের সময়ে হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছে গত ১০ মাসে। কয়েক দফায় বলা হয়েছে, এক্সিম ব্যাংক দুর্বল, এক্সিম ব্যাংক একীভূত হবে। এর ফলে দফায় দফায় আমাদের ব্যাংকের গ্রাহকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। যাতে ব্যাংকের তারল্য–সংকটে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হয়। এ ছাড়া বিদেশিদের দিয়ে ঋণের মান পরীক্ষায় প্রায় অর্ধেক ঋণ খেলাপি হওয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছে, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর। বাণিজ্যিক (ট্রেডিং) ঋণে কখনো শতভাগ জামানত থাকে না, বিদেশিরা জামানত কম পেলেই তা খেলাপি হিসেবে ধরেছে। এ ছাড়া এস আলমের ঋণ নিয়মিত থাকলেও তা খেলাপি বলা হচ্ছে। এভাবে ধরলে সব ব্যাংকের ঋণ অর্ধেক খারাপ হয়ে যাবে। তাই আমরা মনে করি, যথাযথ বাছবিচার ও হিসাব করে একীভূত করার সিদ্ধান্ত আসা উচিত।
নজরুল ইসলাম স্বপন, চেয়ারম্যান, এক্সিম ব্যাংক