ঢাকায় ফিরছে বিপিএল, প্রথম দিনেই জমজমাট লড়াই
Published: 26th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসর আবারও ফিরেছে ঢাকায়। প্রথম পর্বের খেলা শেষে সিলেট এবং চট্টগ্রাম হয়ে রোববার (২৬ জানুয়ারি) থেকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকার দ্বিতীয় পর্ব।
লিগ পর্বের গুরুত্বপূর্ণ দিনে আজ মাঠে নামছে চারটি দল। দিনের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশাল মুখোমুখি হবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের। ডাবল রাউন্ড রবিন লিগে বরিশালের প্লে-অফ নিশ্চিত করতে আর মাত্র একটি জয় প্রয়োজন। অন্যদিকে, টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্স ছাড়া বাকি ছয় দলেরই প্লে-অফে যাওয়ার সুযোগ রয়ে গেছে।
বিপিএলের এবারের আসরের একটি ইতিবাচক দিক হলো, ভালো মানের উইকেটে খেলা হওয়া। ব্যাটাররা মন খুলে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন, ফলে তিন ভেন্যুতেই রান এসেছে প্রচুর। ক্রিকেটারদের মধ্যেও এই নিয়ে সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।
ফরচুন বরিশালের অভিজ্ঞ আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবিও প্রশংসা করেছেন পিচের মান নিয়ে। গতকাল দলের অনুশীলন শেষে নবি বলেন, ‘এবারের পিচগুলো তুলনামূলক ভালো হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচের জন্য ভালো উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনটি ভেন্যুর পিচ এবার বেশি বিশ্রাম পেয়েছে, ফলে মানও উন্নত। আমরা সেরা দুইয়ে থাকতে চাই। সামনে চারটি ম্যাচ এবং প্লে-অফ ঢাকাতেই হবে, তাই এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত।’
দিনের আরেক ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্স মুখোমুখি হবে দুর্বার রাজশাহীর। এই ম্যাচেও উত্তেজনার কোনো কমতি থাকবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট
প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার।
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত।
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি।