২৪ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রাখার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে অবস্থান নিয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। গুচ্ছ ভর্তি বহাল রেখে রাষ্ট্রপতির আদেশ ছাড়া তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

রোববার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তারা লং মার্চ নিয়ে ইউজিসির সামনে যান। এরপর সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। 

দুপুর ১২টার দিকে সেখানে আসেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপরও আন্দোলনকারীরা তা মানেননি। 

এদিকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। ‘শিক্ষা না বাণিজ্য, শিক্ষা শিক্ষা’, ‘মোদের দাবি একটাই, ২৪টাই থাকতে হবে’, ‘ব্যবসা না গুচ্ছ, গুচ্ছ গুচ্ছ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি জমা দিবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

দুপুরেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

এস এম এ ফায়েজ। পরে শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করতে ইউজিসি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া সিয়াম ইউজিসি কার্যালয়ে প্রবেশ করার আগে বলেন, আমাদের একটাই দাবি হলো- ২৪ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই গুচ্ছ থাকতে হবে। এ নিয়ে দ্রুত রাষ্ট্রপতির আদেশ জারি করতে হবে। এ দাবিই আমরা ইউজিসি চেয়ারম্যানকে জানাবো৷ আমরা উনি যদি আমাদের দাবি মেনে নেন, আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাবো। আর দাবি না মানলে আন্দোলন চালয়ে যাবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি জমা দিবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

শেরেবাংলা থানার এসআই আব্দুল খালেক সমকালকে বলেন, আজ সকালে অনেক শিক্ষার্থী ইউজিসির সামনে অবস্থান নেন। কিছু শিক্ষার্থী চলে গেছেন। এখন কয়েকন এখানে অবস্থান করছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউজ স অবস থ ন ন ইউজ স

এছাড়াও পড়ুন:

চুক্তি হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি সাপেক্ষে গোপনীয়তার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় যে গোপনীয়তার বিষয়টি ছিল, চুক্তি সই হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি সাপেক্ষে তা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর শিগগিরই হয়তো যৌথ বিবৃতি আসবে। তথ্য অধিকারের আলোকে এটা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তো‌জার সঙ্গে আলাপচারিতায় বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। গোলাম মোর্তোজা ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, বাণিজ্য চুক্তি কাজে লাগাতে হলে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে এ নিয়ে আত্মসন্তুষ্টির সুযোগ নেই।

গোপনীয়তার বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আন্তর্জাতিক রীতিতে নির্দিষ্ট, শুধু তা–ই নয়, স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক ও বিমা চুক্তিতে উপনীত হয়, তখন এই গোপনীয়তার বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। এমনকি দুজন ব্যক্তি সম্পদ হস্তান্তর করলেও এ ধরনের বিষয় থাকে।

শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, ‘এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র যেখানে চুক্তির মূল নিয়ামক হিসেবে নিজস্ব নিরাপত্তার কথা বলেছে, সেখানে আলোচনায় গোপনীয়তার শর্ত থাকা অবশ্যম্ভাবী। এর মাধ্যমে দেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো উপাদান থাকলে আমরা সে চুক্তিতে করব না, সেটাই স্বভাবিক বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দিন। নিজস্ব স্বার্থ বিসর্জন দেওয়ার সুযোগ নেই। নিজস্ব স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে সক্ষমতার ঘাটতি হবে। তাতে বাণিজ্য চুক্তি করে লাভ হবে না। স্বল্প মেয়াদে বা দীর্ঘ মেয়াদে যদি আমাদের বাণিজ্য সক্ষমতা হ্রাস পায়, কিংবা আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির কোনো ধরনের ক্ষতি হয়, সেই চুক্তি কোনোভাবেই পালনযোগ্য নয়।’

তবে আলোচনা চলাকালে দুঃখজনকভাবে চুক্তিটি ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন শেখ বশিরউদ্দিন। সেখানে দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু নেই। যেগুলো দেশের স্বার্থবিরোধী হতে পারত, সেখান থেকে বাংলাদেশ পরিষ্কারভাবে বের হয়ে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র মোটেও বিষয়টি উত্থাপন করেনি। এই বিষয়টি একমুখী। গত বছর বোয়িং ১২টি বিমান বানিয়েছে। সুতরাং এই চুক্তি অনুযায়ী তারা হয়তো ২০৩৭ সালে প্রথম বিমান সরবরাহ করতে পারবে। বরং তাদের আগ্রহ ছিল কৃষিপণ্য নিয়ে। বাংলাদেশ প্রতি ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্রও কৃষিপণ্যের বৃহৎ উৎপাদক। বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের ভিত্তিতে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর কথা বলেছে, যেসব পণ্য এমনিতেই বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলারের মতো। ফলে বাংলাদেশে তুলা, সয়াবিন, ভুট্টা, গমজাতীয় পণ্য আমদানি বাড়িয়ে ২০০ কোটি ডলারের বাণিজ্যঘাটতি কমানোর চেষ্টা করতে পারে।

বোয়িং বিমান খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিমানের পরিচালনা সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে বিমান কিনে তেমন লাভ হবে না। অন্তর্বর্তী সরকার সেই চেষ্টা করছে। তবে বিমানের পক্ষে অতিরিক্ত এক কোটি যাত্রী পরিবহনের সুযোগ আছে। সেই বিবেচনায় ২৫টি বিমান খুব বেশি কিছু নয়। বিমানের পরিচালন সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ