নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার অপেক্ষায়
Published: 26th, January 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার অপেক্ষায়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা যায়, অতীতের সব ব্যর্থতা মুছে ঘুরে দাঁড়াতে চায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। রাজপথে নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে হলে নেতাদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
তাই জেলা কমিটি ঢেলে সাজাতে চাইছে হাইকমান্ড। জেলা বিএনপির নতুন কমিটির তালিকা ইতিমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে জমা দিয়েছে তারা।
এদিকে জেলা বিএনপির দুই শীর্ষ পদেই থাকছে নতুন চমক। বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রমতে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে নতুন কমিটি। ওখান থেকে গ্রীন সিগন্যাল পেলেই দলীয় মহাসচিব স্বাক্ষরিত কমিটি ঘোষণা করবে।
সবকিছু ঠিক ঠাক শিগগিরই আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি। পুরোনো ও নতুনদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে নতুন কমিটি। তরুণ নেতৃত্ব অগ্রাধিকার পাচ্ছে এই কমিটিতে।
তারই জন্য সাংগঠনিক দিকসহ সবকিছু বিবেচনা করে গত ৫ আগস্টের আগে যেসকল নেতারা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন বাজি রেখে দলীয় ঘোষিত কর্মসূচি নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন সেইসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা এবং সাবেক জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ও তরুণ নেতৃত্বের হাতে দেয়া হচ্ছে দায়িত্ব।
আর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শক্তিশালী কমিটি করতে দলের সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সবকিছু ঠিকঠাক চলতি মাসের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি হতে পারে বলে জানান বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা।
তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটির তালিকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। নতুন কমিটিতে থাকবে অনেক চমক।
কমিটিতে আসছেন নতুন অনেকেই। আসছেন সাংগঠনিকভাবে সুপরিচিত ও ইমেজধারী নেতাদের পাশাপাশি সাবেক ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ। বিগত সময়ের আন্দোলন সংগ্রামে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এমন নেতাদেরও মূল্যায়ন করা হচ্ছে এ কমিটি গঠনে।
জানা যায় , নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি অথবা আহ্বায়ক হিসেবে আলোচনায় রয়েছে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু আলোচনায় রয়েছে। তাদের মধ্যে যেকোনো একজনকে সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। কারন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম তাদের ভূমিকা ছিল প্রশংসিত।
সূত্র আরও জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক সভাপতি পদ নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও সাধারণ সম্পাদক বা সচিব পদটি প্রাথমিক ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক এই পদে দেখা যেতে পারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এক সময়ের তুখোর ছাত্রনেতা মাশুকুল ইসলাম রাজিবকে। জেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও বিএনপি নীতিনির্ধারকদের তার নাম ডাক বাজছে।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে আলোচনায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার। এরা এর আগেও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকেই যাদের ভূমিকা সব থেকে বেশি লক্ষ্য করা গেছে এদেরকে মূল্যায়ন করে জেলা বিএনপির কমিটি দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য , গত (২৪ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। আর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় অতিসত্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা করা হবে।
আর গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের এই কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসতে থাকে। অভিযোগ তদন্তে একটা কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। সেই কমিটির সুপারিশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হল।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের ১৮ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ র ন র য়ণগঞ জ জ ল ব এনপ র স ব ক ব এনপ র ন ব এনপ র ক ত কর ম কম ট র কম ট ত র কম ট সবক ছ গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।