প্রতিবারের মতো এবারও প্রথা মেনে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের (২৬ জানুয়ারি) আগের দিন ঘোষণা করা হয়েছে এ বছরের পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের নাম। এবার পদ্ম সম্মানে ভূষিত হয়েছেন মোট ১৩৯ জন। তার মধ্যে মধ্যে ৭ পদ্মবিভূষণ, ১৯ পদ্মভূষণ সম্মান প্রদান করা হয়েছে। 

তবে সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিক, শ্রেয়া ঘোষাল, সুনিধি চৌহান এবং কিশোর কুমারের মতো কিংবদন্তি গায়কদের পদ্ম পুরস্কার না দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আরেক সংগীতশিল্পী সোনু নিগম।

সোনু নিগমের কথায় উঠে এল তাদের প্রসঙ্গ। একটি ভিডিওতে সোনু প্রশ্ন তুলেছেন কেন কিশোর কুমার, অলকা ইয়াগনিক, শ্রেয়া ঘোষাল এবং সুনিধি চৌহানের মতো সঙ্গীত শিল্পীদের এখনও পর্যন্ত কোনও পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হয়নি। সোনুর কথায়, ‘যে গায়কেরা প্রত্যেকের জীবনের অনুপ্রেরণা, তাঁদের প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’

ভিডিওতে সোনু বলছেন, ‘দু’জন গায়ক, যারা সারা বিশ্বের গায়কদের অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁদের মধ্যে শুধু একজনকে পদ্মশ্রী দেওয়া হয়েছে। তিনি মোহম্মদ রফি সাহেব। একজন আছেন, যিনি পদ্মশ্রী পাননি এখনও পর্যন্ত। তিনি কিশোর কুমার।’

এখানেই থেমে থাকেননি সোনু নিগম। তার কথায়, ‘অলকা ইয়াগনিকজির এত বছরের কেরিয়ার। তিনি এখনও পর্যন্ত কোনও পুরস্কার পাননি। শ্রেয়া ঘোষাল দীর্ঘদিন ধরেই একের পর এক গান গেয়ে সকলের মন জয় করেছেন। তাহলে তো তাদেরও পাওয়া উচিত এই সম্মান। সুনিধি চৌহান তাঁর অনন্য কণ্ঠ দিয়ে পুরো প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন। কেন তিনি এখনও কিছুই পাননি।’

ভিডিওর শেষে সোনু নিগম বলেছেন, ‘এমন ব্যক্তিদের নাম তুলে ধরতে, যারা যোগ্যতা সত্ত্বেও এখনও পদ্ম পুরস্কার পাননি, তবে পাওয়া উচিত ছিল। সেটা গানের জগতের হোক কিংবা অভিনয়ের, বিজ্ঞানের হোক কিংবা সাহিত্যের।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন ন গম কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও