ভাইয়ের হয়ে জেলে যান আজির, দেড় মাস পর ধরা
Published: 27th, January 2025 GMT
আজির উদ্দিনকে ভালো চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসামি সেজে আদালতে জামিন আবেদন করতে বলেন এক মামলার আসামি তাঁরই আপন ভাই নাজমুল হোসেন। সে অনুযায়ী আবেদন করলেও চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে আজ সোমবার দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজির ও নাজমুলের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বালাপাড়ায়। আজ তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলা করেছেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক। আদালতের বেঞ্চ সহকারী নূরে খোদা এসব তথ্য জানিয়েছেন। আসামি নাজমুল পলাতক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় করা প্রতারণার একটি মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি নাজমুল। তাঁর ভাই আজির ওই মামলার আসামি সেজে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ দিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত। কারাগারে যাওয়ার পর ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের ডেটাবেজে তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, আজির উদ্দিন জামিন আবেদনে নিজেকে ‘নাজমুল হোসেন’ পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এ তথ্য যাচাই করেন আইনজীবী টি আর খান তাহিম। এরপর প্রতারণার ঘটনা অবগত করে সংশ্লিষ্ট আদালতে চিঠি পাঠানো হয়।
সোমবার করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নাজমুল হোসেনের কথামতো ভালো চাকরির লোভে এজলাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন আজির। তাঁর পক্ষে আইনজীবী টি আর খান তাহিম কর্তৃক ১০ ডিসেম্বর ওকালতনামায় আজিরের সঙ্গে নাজমুলও সই করেন। দুই আসামিই পরস্পর ভাই। নাজমুল হোসেন না হয়েও ওকালতনামায় ‘নাজমুল হোসেন’ হিসেবে সই করে আদালতে জাল ওকালতনামা দিয়েছেন আজির, যা পেনাল কোর্ডের ২০৫ ও ৪৬৬ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।