দিনাজপুরের হাকিমপুরে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টেকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।  

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা গ্রামে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সঙ্গে তৌহিদী জনতার ব্যানারে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ হয়। 

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় বলেন, “প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিছু লোকজন অতর্কিত হামলা চালানোর কারণে ৪-৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।” 

আরো পড়ুন:

বাস শ্রমিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬

এলাকাবাসী জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে বাওনা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বাওনা গ্রামের অস্থায়ী মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে টিকিট করে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইউএনও অমিত রায়, হাকিমপুর ঘোড়াঘাট সার্কেলের এএসপি আ.

ন. ম নিয়ামত উল্লাহ, ওসি মো. সুজন মিঞা, তদন্ত ওসি জাহাঙ্গীর আলম মিছিলকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ শান্ত এবং খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করেন। 

এরপর প্রশাসনের লোকজন অস্থায়ী মাঠে গিয়ে আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা বলে। এরমধ্যে কয়েকজন যুবক লাঠি নিয়ে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের লোকজনের দিকে এগিয়ে যান। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। 

তৌহদী জনতার আজিজুল হক অভিযোগ করেন, “বাওনা গ্রামের যুব সমাজের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। তারা প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করে। তখন আমরা এই খেলা বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেই এবং বিক্ষোভ করি। তারা (প্রশাসন) আমাদের আশ্বাস দেন খেলা হবে না। আজ আবারো তারা (খেলার আয়োজকরা) এলাকায় মাইকিং করে এবং মিথ্যা কথা বলে যে, ডিসি মহোদয় অনুমতি দিয়েছেন।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বলে আপনারা শান্ত থাকেন, আমরা বন্ধের ব্যবস্থা করছি। এরমধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আয়োজক কমিটির লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় আমাদের গালিব, আব্দুর রহমান, রায়হানসহ সাতজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।” 

হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সার্কেল এএসপি আ. ন. ম নিয়ামত উল্লাহ বলেন, “অনুমতি ছাড়া প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।” 

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত ফ টবল ট র ন ম ন ট র ট র ন ম ন ট র আয় র ল কজন স ঘর ষ হয় ছ ন জনত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ