প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭
Published: 28th, January 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুরে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টেকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা গ্রামে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সঙ্গে তৌহিদী জনতার ব্যানারে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ হয়।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় বলেন, “প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিছু লোকজন অতর্কিত হামলা চালানোর কারণে ৪-৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।”
আরো পড়ুন:
বাস শ্রমিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩
রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
এলাকাবাসী জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে বাওনা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বাওনা গ্রামের অস্থায়ী মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে টিকিট করে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইউএনও অমিত রায়, হাকিমপুর ঘোড়াঘাট সার্কেলের এএসপি আ.
এরপর প্রশাসনের লোকজন অস্থায়ী মাঠে গিয়ে আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা বলে। এরমধ্যে কয়েকজন যুবক লাঠি নিয়ে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের লোকজনের দিকে এগিয়ে যান। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
তৌহদী জনতার আজিজুল হক অভিযোগ করেন, “বাওনা গ্রামের যুব সমাজের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। তারা প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করে। তখন আমরা এই খেলা বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেই এবং বিক্ষোভ করি। তারা (প্রশাসন) আমাদের আশ্বাস দেন খেলা হবে না। আজ আবারো তারা (খেলার আয়োজকরা) এলাকায় মাইকিং করে এবং মিথ্যা কথা বলে যে, ডিসি মহোদয় অনুমতি দিয়েছেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বলে আপনারা শান্ত থাকেন, আমরা বন্ধের ব্যবস্থা করছি। এরমধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আয়োজক কমিটির লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় আমাদের গালিব, আব্দুর রহমান, রায়হানসহ সাতজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।”
হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সার্কেল এএসপি আ. ন. ম নিয়ামত উল্লাহ বলেন, “অনুমতি ছাড়া প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত ফ টবল ট র ন ম ন ট র ট র ন ম ন ট র আয় র ল কজন স ঘর ষ হয় ছ ন জনত র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।