বিএনপির এক কর্মীকে হত্যার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের ৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার ১০ বছর পর নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন রোববার কামারখন্দ আমলি আদালতে মামলাটি করেন। 

মঙ্গলবার বাদীপক্ষের আইনজীবী এস. এম নাজমুল ইসলাম জানান, কামারখন্দ থানাকে মামলাটি এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।  
জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে। ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের দক্ষিণ পাশ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সাবেক এমপি মুন্না ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন– সদর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার অপসারিত মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জানপুর মহল্লার মো.

আলম, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আজিজল তালুকদার, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাকিম, সয়দাবাদ ইউপির অপসারিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবীদুল ইসলাম।

এজাহারে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আলম ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় তারা জাহাঙ্গীরকে হত্যা ও গুমের পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাহাঙ্গীরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। বাদী রোজিনা খাতুনকে মোবাইল ফোনে কল করে নবীদুল ইসলাম বলেন, ‘তোর স্বামীকে অপহরণ করেছি। জীবিত ফিরে পেতে চাইলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।’ এরপর দুই দফায় নবীদুলকে ১০ লাখ টাকা দেন তিনি। তারপরও জাহাঙ্গীরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ল ইসল ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ