গুগল-ফেসবুক আগ্রাসনে সংবাদমাধ্যমের করণীয়
Published: 28th, January 2025 GMT
গুগল, ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আয়ের সিংহভাগই আসে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাণিজ্য থেকে। এর উৎস সংবাদসহ ডিজিটাল কনটেন্ট। এসব কনটেন্ট থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করলেও গুগল কিংবা ফেসবুক কনটেন্ট প্রকাশকদের সঙ্গে আয় ভাগাভাগি নামমাত্র করে থাকে। সংবাদমাধ্যমগুলো একদিকে গুগল, ফেসবুক ও ইউটিউবের কাছে বাজার হারাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের ডিজিটাল আয়ের ছিটেফোঁটা পেতে ভিউ আর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের পেছনে ছুটতে ছুটতে মুমূর্ষু দশা। এই জিম্মি দশা থেকে সংবাদমাধ্যমের উত্তরণের উপায় কী?
সামাজিক মাধ্যমের আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে নানা উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন, ব্লুমবার্গ, ওয়াশিংটন পোস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমগুলো ডিজিটাল সাবস্ক্রিপশন চালু করেছে। কোনো কোনো মিডিয়া আংশিক সাবস্ক্রিপশন চালু করেছে; নির্বাচিত কিছু সংবাদ বিনামূল্যে পড়া গেলেও এক্সক্লুসিভগুলো পড়তে অর্থ গুনতে হবে। সাবস্ক্রাইবার বিজ্ঞাপন ছাড়া খবর পড়ারও সুযোগ পাবেন। কিছু মিডিয়া ডোনেশন পদ্ধতি চালু করেছে; খবর বিনামূল্যে পড়া গেলেও শুভানুধ্যায়ী ও পাঠকরা অর্থ দিতে পারবেন। অনেক সংবাদমাধ্যম ডেটা সেলিং, পেইড কনটেন্টসহ নতুন নতুন ধারণা বাস্তবায়নে সফল হচ্ছে।
সংবাদের জন্য পেইড সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতি আমাদের মতো দেশে বেশ কঠিন; দর্শক-পাঠকরা বিনামূল্যে খবর পেতে অভ্যস্ত। অস্ট্রেলিয়া সরকার নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, সামাজিক মাধ্যম সংবাদ থেকে প্রাপ্ত আয়ের সর্বোচ্চ ১৯ শতাংশ দেয় প্রকাশকদের। বৈষম্যমূলক এ ব্যবস্থা পরিবর্তন করে প্রকাশকদের ন্যায্য হিস্যা দিতে ‘নিউজ মিডিয়া বার্গেইনিং কোড (এনএমবিসি)’ নামে আইন চালু করেছে দেশটি। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিজিটাল কনটেন্টের আয়ের সুষম বণ্টনে ২০২১ সালে প্রণীত এ আইনে গুগল, ফেসবুক, ইউটিউবে কোনো সংবাদ কনটেন্ট শেয়ার হলে সেখান থেকে আয়ের একটি অংশ সংশ্লিষ্ট প্রকাশককে দিতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু ওই সময় বেঁকে বসে ফেসবুক-গুগল। দেশটির জন্য সংবাদ কনটেন্ট দেখার সুযোগই বাতিল করে দেয় ফেসবুক। তবে অস্ট্রেলিয়া সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে পরবর্তী সময়ে লেজ সোজা করতে বাধ্য হয় ফেসবুক। ফলে শুধু গত বছরই ফেসবুকে খবরের লিংক শেয়ারের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার প্রকাশকরা প্রায় ৪৭ মিলিয়ন ডলার বাড়তি আয় করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রায় কাছাকাছি আইন পাস করেছে কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যও এ ধরনের আইন পাসের পথে। ভারতও নিজেদের মতো আইন পাস করেছে। তবে সংবাদ কনটেন্ট থেকে প্রকাশকদের আয় বিগটেকের আয়ের তুলনায় এ পদ্ধতিতেও নগণ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক হারিস মাতিন, ব্র্যাটেল গ্রুপের জ্যেষ্ঠ সহযোগী হারিস তাবাকোভিচ এবং প্যাট্রিক হোল্ডার যৌথ এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, সংবাদনির্ভর ভালো কনটেন্টের কারণেই গুগল-ফেসবুক-ইউটিউবের মতো মাধ্যমে বেশি বেশি আসছেন ব্যবহারকারীরা। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে এসব মাধ্যমের। এ আয়ে সংবাদ কনটেন্ট নির্মাতা ও পরিবেশকদেরও ন্যায্য হিস্যা রয়েছে। এখানে বৃহৎ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং সংবাদ কনটেন্ট নির্মাতা ও পরিবেশক পরস্পরের পরিপূরক। কাজেই এখানে আয়েরও সুষম বণ্টন হওয়া উচিত। এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০২২ সালেই ১৫ বিলিয়ন ডলার হিস্যা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমকে বঞ্চিত করেছে বিগটেকগুলো।
যেখানে উন্নত দেশের সংবাদমাধ্যমকেই নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছে ফেসবুক-গুগল, সেখানে আমরা তো কোন ছার! এক দশক ধরে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করেও বাংলাদেশে ফেসবুক-গুগলকে অফিস খোলাতে পারেনি। এ দেশ থেকে কী পরিমাণ আয় করে তারা, সে হিসাবও দেয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে সরকার নীতিমালা করার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এনবিআর বিগটেক কোম্পানি থেকে মোট ১১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় করতে পেরেছে। এর মধ্যে ফেসবুক দিয়েছে ৪৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। যৎসামান্য ভ্যাট দিলেও এখনও ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে এসব কোম্পানি।
দেশের বিজ্ঞাপনদাতারা সাধারণত ক্রেডিট কার্ড বা অন্য কোনো উপায়ে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেন। তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রাখে। এখানে আলাদা করে ফেসবুক-গুগলসহ অন্যান্য বিদেশি টেক কোম্পানিকে ভ্যাট দিতে হয় না। ভ্যাটের কাগজ এনবিআরে কেবল জমা দেয়। ট্যাক্স তারা দিচ্ছেই না; যথাযথ ভ্যাটও কি দিচ্ছে?
বাংলাদেশে ২০২২ সালে প্রিন্ট ও টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনের বাজারমূল্য ছিল ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২৩ সালে এসে সেটি ৭ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকায় নেমে আসে (সময় নিউজ, ২৭ সেপ্টেম্বর ২৪)। এখন নিশ্চয় আরও কমেছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাজার এর চেয়ে ঢের বেশি হওয়ার কথা। সেটি যদি আমরা ১০ হাজার কোটি টাকাও ধরে নিই এবং এর ৮০ শতাংশ যদি ফেসবুক-গুগলসহ অন্যান্য টেকজায়ান্ট পেয়ে থাকে, তবে ভ্যাটের পরিমাণ হয় ১২শ কোটি টাকা!
ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, টাকার পুরোটাই যাচ্ছে ডলার হিসেবে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ছে। এনবিআর ২০১৯ সালে বিগটেকের জন্য ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার পর ২০২০ সালে দেশে এইচটিটিপুল নামে অথরাইজড এজেন্টের অফিস চালু করে ফেসবুক। শোনা যায়, ডলার সংকটে বাংলাদেশ থেকে আয়ের টাকা স্থানান্তর করতে ঝামেলায় পড়ে ২০২৩ সালের জুনেই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে এইচটিটিপুল। এমন পদক্ষেপ ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার কৌশল কিনা– সে প্রশ্নেরও অবকাশ রয়েছে। কেননা, ব্যাংকিং চ্যানেলে ট্রাভেল কোটায় একটি ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি খরচ করার সুযোগ নেই। বেসিস সদস্যরা সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ডলার খরচ করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচারে মোটা অঙ্কের অর্থ যে চলে যাচ্ছে, সেটা যাচ্ছে কীভাবে? অভিযোগ আছে, দেশের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বাইরে থাকা কার্যালয় থেকে বিজ্ঞাপনের মূল্য পরিশোধ করে। হুন্ডির মাধ্যমেও যায়। এইচটিটিপুল যখন বাংলাদেশে ছিল তখন ইচ্ছামতো ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ব্যয় করার সুযোগ ছিল, কিন্তু এখন? এইচটিটিপুল বন্ধ হওয়ার পর দেশে কি ফেসবুক-গুগলের বিজ্ঞাপন কমেছে? মনে হয় না।
দেশীয় সংবাদমাধ্যম বাঁচানোর পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা পাচার বন্ধে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাতকে নজরদারির আওতায় আনতে হবে। দেশের টাকা দেশের বিজ্ঞাপনের অর্থ যেন শতভাগ দেশীয় সংবাদমাধ্যম পায়, এ জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, শীর্ষ বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। নীতিমালা করতে হবে– দেশীয় কোম্পানিগুলো যেন তার বিজ্ঞাপন খরচের পুরোটা না হোক; অন্তত বড় অংশ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেয়।
কার্যকর নীতিমালা হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর গুগল-ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ রাখতে হবে। আবার ছোট ছোট উদ্যোক্তা, যারা ফেসবুক-গুগলকেন্দ্রিক ব্যবসা করেন, তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। এতে যেমন সংকটময় সময়ে ডলারের অপচয় রোধ হবে, তেমনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও নিছক ভিউ ও ভাইরালের পেছনে না ছুটে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় মনোযোগ দিতে পারবে।
পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণকে টিকিয়ে রাখতে কাগজ আমদানিসহ অন্যান্য খাতে বাড়তি শুল্ক পরিহার করাও সময়ের দাবি। মিডিয়া বায়িং এজেন্সিও যেন বিজ্ঞাপনের কমিশনে স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে, এদিকটাও দেখা দরকার। মানসম্মত সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকারকেই এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
মিডিয়ার যখন সংস্কারের কথা উঠছে তখন টেকসই, জবাবদিহিমূলক, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখার আহ্বান জানাই। সংবাদমাধ্যমকেও শুধু সরকারের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের উদ্যোগী, উদ্যমী হতে হবে। নতুন প্রজন্মের চাহিদা মাথায় রেখে সংবাদ উপস্থাপনে নতুন চিন্তার পাশাপাশি আয় বাড়াতে নতুন নতুন উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নে মনোযোগী হতে হবে।
হাসান জাকির: সহকারী সম্পাদক, সমকাল
prantojakir@gmail.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব দ কনট ন ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫