শরীরটা জীর্ণশীর্ণ। মাঘের হাড় কাঁপানো শীতেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনায় সড়কের বিভাজকের ওপর দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন এক বৃদ্ধ। অসুস্থতা তাঁর শরীরে এমনভাবে বাসা বেঁধেছে যে, হাঁটা-চলা দূরের কথা, ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন না সত্তরোর্ধ্ব এই বৃদ্ধ। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলেনি তাঁর পরিচয়।
জানা গেছে, চান্দিনা-বাগুর বাসস্টেশনের অদূরে মহাসড়কের বিভাজকের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পলিথিনের তাঁবুর নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তিনি। যেখানে বসে আছেন, সেখানেই ঘুমাচ্ছেন। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে এমনকি মলমূত্র ত্যাগও করেছেন একই জায়গায়। দীর্ঘদিন ধরে গোসল না থাকায় এবং শরীর থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পথচারীদের দেওয়া খাবার খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে ছিলেন অচেনা ওই বৃদ্ধ। 
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ চার মাস পড়ে থাকলেও তাঁর চিকিৎসাসেবায় কিংবা আশ্রয় দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেনি কেউ।
সাংবাদিক মাসুমুর রহমান মাসুদ সমকালকে বলেন, ওই ব্যক্তি অস্পষ্ট ভাষায় শুধু কোরআনের কয়েকটি আয়াত পাঠ ছাড়া পরিচয় বলতে না পারায় বিপত্তি দেখা দেয়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আনার পরই তাঁকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।  
স্থানীয় বাসিন্দা মো.

রবিন জানান, ওই ব্যক্তির কোনো সন্তান আছে কিনা তাও তাদের জানা নেই। তবে অধিকাংশ মানুষ সন্দেহ করছেন, হয়তো সন্তানরাই তাঁকে এখানে ফেলে গেছেন।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পরই অজ্ঞাতনামা বৃদ্ধকে সোমবার উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ