আন্তঃব্যাংক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এগোতে না পারার একটা বড় কারণ এটাকে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়া হয়েছিল। আন্তঃব্যাংক এমএফএস পরিচালনার জন্য ‘বিনিময়’ নামে প্লাটফর্ম করা হয়েছিল সেটি ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের শেল কোম্পানি।

আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

প্রথম আলো আয়োজিত ‘ডিজিটাল লেনদেনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: পরিপ্রেক্ষিত ভ্যাট বৃদ্ধি’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে। আলোচনায় অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খিন চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান তানজিল এ চৌধুরী, সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিনসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা কর হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর অনুরোধ জানান। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বাজেটে একটা বড় পরিবর্তন দেখবেন। তবে এজন্য ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতার ওপর জোর দিতে হবে। যার যে কর আসে সেটা দিতে হবে।

গভর্নর বলেন, আমাদের কর ব্যবস্থাপনার পূর্ণ অনলাইন প্রয়োজন, ভ্যাট- ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ণ অনলাইন না হলে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি বন্ধ হবে না। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরই থেকে ট্যাক্স ফাইল জমা দিতে গিয়ে একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল। আমাদের ম্যানেজারকে ডেকে নিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করছিল। তা না দেওয়ায় পরে ৫ কোটি টাকা কে বসিয়ে দিয়ে পরে বদলি হয়ে গেছে। এরকম হলে কি করবে বলেন।

তিনি আরও বলেন, একটি পণ্য আমদানি থেকে উৎপাদন ও বিক্রি পর্যন্ত ১০% এর ওপরে ভ্যাট হওয়া উচিত না। আমি মনে করি বর্তমানে যে ১৫% পর্যন্ত ভ্যাট দিতে হচ্ছে তা সকালের জন্য কঠিন হবে। তিনি বলেন, ইমিডিয়েটলি রাজস্ব খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। এখানে অনেক ধরনের সংস্কার দরকার রয়েছে। যা করতে ৩-৪ বছর লাগবে। বর্তমান সরকার হয়তো এই সময়টা পাবে না, তবে আমরা শুরু করব। 

গভর্নর বলেন, ‘অনেকে মূল্যস্ফীতি এর ক্ষেত্রে পলিসি কাজ করছে না’ এমন মন্তব্য করছেন, আমি বলব পলিসি ইজ ওয়ার্কিং একটু কন্ট্রোল ইনফ্লেশন। উন্নতশীল দেশগুলোতেও পদক্ষেপ নেওয়ার পর ১০ থেকে ১২ মাস সময় প্রয়োজন হয়।  আমরা আশা করছি আগামী জুনের মধ্যে ভালো একটা সুফল পাব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে এখন যে ডিপোজিট গ্রোথ রয়েছে তা খুবই কম। আমি মনে করি আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের ন্যূনতম ১৪ থেকে ১৬% পর্যন্ত ডিপোজিট গ্রোথ হওয়া দরকার।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সামাজিক নিরাপত্তা ও বৃত্তির অর্থ যাবে পছন্দের হিসাবে 

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্য কার্যক্রমের নগদ অর্থ উপকারভোগীরা নিজেদের পছন্দের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে নিতে পারবেন। বিতরণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ভাতা বিতরণে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে দিতে পারবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিপত্র আকারে জারি করেছে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীরা তাদের পছন্দমতো হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা নিতে পারবেন। এ ছাড়া এমএফএস এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অভিন্ন ক্যাশ আউট চার্জ শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্যাশ আউট চার্জ সরকার পরিশোধ করবে। আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি ভাতা বিতরণের নতুন এ নিয়ম কার্যকর হবে। জানা গেছে, বর্তমানে চার্জ রয়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার পাশাপাশি শিক্ষা উপবৃত্তি এবং অন্যান্য নগদ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়। আগামী অর্থবছর থেকে উপকারভোগীরা এ ধরনের অর্থ তাদের পছন্দের অ্যাকাউন্টে নিতে পারবেন। ভাতাভোগীদের নতুন করে কোনো হিসাব খুলতে হবে না।

২০২১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদকে ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নগদ দায়িত্ব পায় ৪০টি জেলার। বাকি ২৪টি জেলায় অন্যান্য এমএফএস ও ব্যাংকের মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হয়।  

অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভাতা বিতরণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না। ফলে সারাদেশের যে কোনো জায়গার ভাতাভোগীরা তাদের নিজেদের পছন্দের হিসাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ ক্যাশ আউট চার্জসহ একসঙ্গে পাঠাতে হবে। নগদ বিতরণের ক্ষেত্রে এমএফএস বা ব্যাংক উপকারভোগীর ওপর কোনো ধরনের চার্জ আরোপ করতে পারবে না। ইফটি রিটার্নের ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট চার্জসহ সরকারকে ফেরত দিতে হবে। ইএফটির রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংয়ের জন্য অর্থ বিভাগের সিঙ্গেল রেজিস্ট্রি সিস্টেমে প্রতিটি এমএফএস এবং ব্যাংক সংযোগ স্থাপন আগামী ২৯ মে’র মধ্যে শেষ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক নিরাপত্তা ও বৃত্তির অর্থ যাবে পছন্দের হিসাবে