নানা অসন্তোষে নারী ফুটবলারদের অনুশীলন বর্জন
Published: 29th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলাররা অনুশীলন বর্জন করেছেন। চুক্তি নবায়ন না হওয়া, বেতন-ভাতা না পাওয়া, কোচের সঙ্গে দূরত্ব ও বিদেশি লিগে খেলার অনুমিত না পাওয়ায় তারা এই অনুশীলন বর্জন করেছেন বলে জানা গেছে।
গত অক্টোবরে নেপালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফের শিরোপা জিতেছেন সাবিনা খাতুনরা-ঋতু মনিরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) থেকে শেষবার ওই অক্টোবরের বেতনই পেয়েছেন নারী ফুটবলাররা। এরপর থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না তারা।
জানা গেছে, গত অক্টোবরে বাফুফের সঙ্গে ফুটবলারদের চুক্তি শেষ হয়েছে। এরপর নতুন চুক্তি দেওয়া হয়নি তাদের। চুক্তি না থাকায় বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না এই ফুটবলাররা। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন চুক্তি কবে পাবেন জানেন না তারা।
ওদিকে সাফ জেতানো কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছে ফেডারেশন। এ নিয়ে নারী ফুটবলারদের মধ্যে অস্বস্তি রয়েছে। কোচের সঙ্গে দূরত্ব আছে অনেক ফুটবলারের। তাকে মেয়েরা জাতীয় দলের ডাগ আউটে চান না বলেও খবর।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মেয়েদের বিদেশি লিগে খেলতে না দেওয়ার বিষয়টি। দেশে মেয়েদের নিয়মিত কোন লিগ নেই। আবার মেয়েরা নিজেদের চেষ্টায় বিদেশি কোন লিগে স্বল্প সময়ের জন্য খেলার ব্যবস্থা করে নিলেও নানা আপত্তিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয় না মেয়েদের।
এসব অসন্তোষের কারণে বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলরা অনুশীলন বর্জনের পথে হেঁটেছে। বিষয়টি নিয়ে বাফুফের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল সাবিনাদের। তবে জানা গেছে, তারা বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করতে চান এবং সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান চান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ফ চ য ম প য়নশ প ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।
চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।
আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।
নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’