গ্রাহকের ১৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও
Published: 30th, January 2025 GMT
টাঙ্গাইল শহরের সবুজবাগ বাগানবাড়ীতে অবস্থিত ইয়ং ইকোনমিক সোসাইটি (ইয়েস) নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গ্রাহকের প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে ওই সংস্থার আমানতকারীরা উপস্থিত হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
সংস্থাটির বাগানবাড়ী শাখার সাবেক হিসাবরক্ষক ও আমানতকারী নিতাই চন্দ্র রায় লিখিত বক্তব্যে জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইয়েসের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন সংস্থাটি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেন। ২০২০ সালে সংস্থার কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে সংস্থাটি জেলার বিভিন্ন স্থানে ৯টি শাখার মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ শুরু করে।
অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ৯টি শাখার মাধ্যমে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আমানত ও সঞ্চয় সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে শুধু শহরের সবুজবাগ বাগানবাড়ীর প্রধান শাখা থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। চলতি বছরের শুরুতে আমানতকারীর জমানো টাকা ফেরত না দিয়ে সবকটি শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন পালিয়ে গেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ইয়েস নামে এনজিওতে যাদের চাকরি হয়েছে, তারাও ৩, ৫ ও ৭ লাখ টাকা করে লাভের আশায় আমানত রেখেছেন। ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত আমানতকারীদের টাকার বিপরীতে লভ্যাংশ পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর আমানতকারীরা জমা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে চলতি বছরের শুরুতে হঠাৎ সব শাখা বন্ধ করে দিয়ে সংস্থার প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন– টাঙ্গাইলের সালমা পারভীন, নাসরিন সুলতানা, ইয়াছমিন আক্তার স্মৃতি, মলিনা বসাকসহ প্রায় ২৫ আমানতকারী।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেনের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ১৫ ক ট
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?