ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে রংপুর মহানগর পুলিশ (আরপিএমপি)। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকার বোনের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো.

মজিদ আলী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কবে নাগাদ তাকে আদালতে তোলা হবে, সে বিষয়টি এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাহামুদুল হাসান মুন্না নিহতের ঘটনায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার ছেলেসহ ১২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত বছরের ২৯ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে মামলাটি করেন মুন্নার বাবা আব্দুল মজিদ।

এ মামলায় গত ২৮ জানুয়ারি রাতে নগরীর স্টেশন বাবুপাড়ায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা আল-আমিন হোসেনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর আগে, একই মামলায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছোট ভাই শামসুজ্জামান আহমেদ ভুট্টুকে কালীগঞ্জ বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

এদিকে, লালমনিরহাট জেলাতেও ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নামে আটটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

আমিরুল/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র জ জ ম ন আহম দ গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।

ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।

ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।

গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে।  এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। 

হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার  বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ