সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফের নিহতের খবর নিশ্চিত করল হামাস
Published: 31st, January 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফের নিহত হওয়ার খবর আগেই জানিয়েছিল ইসরায়েল। এবার হামাসের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, দেইফ নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে হামাস আরও জানায়, সংগঠনের সামরিক শাখার উপপ্রধান মারওয়ান ইশা নিহত হয়েছেন। যদিও এই কমান্ডারের নিহতের খবর যুক্তরাষ্ট্র গত বছরের মার্চে দিয়েছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনের তথ্য, মোহাম্মদ দেইফ হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের কমান্ডার। দেইফের জন্ম ১৯৬৫ সালে, খান ইউনিস শরণার্থীশিবিরে। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই শরণার্থীশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেইফের নাম ছিল মোহাম্মদ মাসরি। ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদা শুরুর পর তিনি হামাসে যোগ দেন। তখন তার নাম হয় মোহাম্মদ দেইফ। ১৯৮৯ সালে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দেইফ। তখন ১৬ মাস কারাগারে ছিলেন তিনি। হামাসের সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজা থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন দেইফ। পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তবে নানা বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কমিটির প্রধান ছিলেন। মঞ্চে অভিনয় করেছেন।
গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অসংখ্য টানেল বা সুড়ঙ্গ রয়েছে। এ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন দেইফ। এ ছাড়া তিনি হামাসের বোমা বানানোর প্রকল্পে ভূমিকা রেখেছেন। তবে সচরাচর প্রকাশ্যে আসতেন না দেইফ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।