কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিএনপিতে স্থান দেওয়া হবে না। যদি এমন কেউ দলের মধ্যে থেকে থাকে তাহলে সেটি আমাদের জানাবেন। আমরা গণশুনানি করে ফ্যাসিবাদের সহযোগীকে সরানোর জন্য আমাদের সিনিয়র নেতাদের কাছে আবেদন করব।” 

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) চাঁদপুরের হাইমচরের আলগী বাজার আদর্শ শিশু নিকেতন স্কুল মাঠে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পরিচিত ও প্রথম সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, “দলকে শক্তিশালী করার জন্য আগামী দিনে সম্মেলনের মাধ্যমে যাকেই আপনারা নেতা বানাতে চান সেটি নিশ্চিতে আপনাদের এবং কাউন্সিলরদের ভূমিকা রাখতে হবে। কোনো ফ্যাসিবাদের সহযোগীকে দলের মধ্যে অবস্থান করতে দেওয়া যাবে না। যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগিতা নিয়ে ১৬ বছরে আপনাদের ক্ষতি করেছে, তারা যেনো দলের কোনো জায়গায় আসতে না পারে সেদিকে আপনারা সতর্ক থাকবেন।”

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবদলের শীতবস্ত্র বিতরণ

কম্প্রোমাইজ নয়, নির্বাচন হতেই হবে: তারেক রহমান

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিম। হাইমচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.

আমিন উল্লাহ বেপারীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. মাজহারুল ইসলাম শফিক পাটোয়ারীর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালেক, কাজী ইসহাক খোকন, মো. মিজানুর রহমান শেখ, প্রভাষক হারুনুর রশীদ, খোরশেদ কোতওয়াল, বিল্লাল হোসেন আখন, আজিজুল হক বাবুল, সরদার আবু তাহের, সদস্য আক্তার হোসেন হাওলাদার, আবুল কালাম আজাদ।

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ফ য স ব দ র সহয গ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভুলে যাবেন না, শরীরচর্চা একটি সুন্নত

খেলাধুলা ও শারীরিক ব্যায়াম আধুনিক জীবনে প্রায়ই অবহেলিত হয়, বিশেষ করে ব্যস্ততার কারণে। কিন্তু ইসলামে খেলাধুলার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে, যা নবীজি (সা.)-এর জীবন থেকে শুরু হয়েছে। তিনি নিজে বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নিয়েছিলেন এবং এর আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উপকারিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

শরীরচর্চার আধ্যাত্মিক উপকারিতা

শরীরচর্চা ইসলামে একটি ভুলে যাওয়া সুন্নাহ, যা আমাদের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে। এটি আমাদের মনোযোগ ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, সম্প্রদায়ের বন্ধন জোরদার করে এবং হারাম থেকে দূরে রাখে। যেমন:

দুটি নিয়ামত এমন আছে, যার প্রতি অনেক মানুষ প্রতারিত হয়: স্বাস্থ্য ও অবসর সময়।সহিহ বুখারী, হাদিস: ৬,৪১২

১. মনোযোগ ও অবিচলতা গড়ে তোলে

ইসলাম আমাদের নিজেকে উন্নত করতে ও পরকালে উত্তম স্থান অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে শেখায়। শরীরচর্চা এই প্রক্রিয়ায় সহায়ক; কারণ, এটি মনোযোগ, সংগ্রাম এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আমাদের মন ও শরীরকে শক্তিশালী করে।

শারীরিক ব্যায়ামের সময় আমরা যখন মাত্রা অতিক্রম করে যাই, তখন তাৎক্ষণিক আরাম ত্যাগ করে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানসিক শক্তি অর্জন হয়।

আরও পড়ুনউত্তম ব্যবসায়ী হওয়ার নববি কৌশল০৯ জুন ২০২৫

২. সমাজের শক্তি বৃদ্ধি করে

ইসলামে সামাজিক ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই এক উম্মাহর অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই এই যে তোমাদের উম্মাহ, এটা তো একই উম্মাহ, আর আমি তোমাদের রব, অতএব আমার ইবাদত করো।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯২)

জুমার নামাজ, হজের মতো ইবাদত আমাদের সম্প্রদায়ের বন্ধনকে শক্তিশালী করে।

দলগত খেলাধুলা বা ব্যায়াম অনুশলীন এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। সাইক্লিং, দৌড় বা সাঁতারের মতো সামাজিক আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে এবং যোগাযোগ, দলগত কাজ ও স্থিতিস্থাপকতার দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এটি ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৩. হারাম থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়

আধুনিক সমাজে হারাম ক্রিয়াকলাপ—যেমন মদ্যপান, অবৈধ সম্পর্ক, জুয়া বা অনৈতিক কনটেন্ট—সহজলভ্য। এই প্রলোভনগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখা, বিশেষ করে তরুণদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের সময় ও শক্তিকে ইতিবাচক কাজে লাগাতে সাহায্য করে। জিমে শরীরচর্চা বা মাঠে শারীরিক প্রশিক্ষণ আমাদের মনকে হারাম থেকে দূরে রাখে এবং দ্বীনের প্রতি নিবেদিত রাখে।

সাইক্লিং, দৌড় বা সাঁতারের মতো সামাজিক আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে এবং যোগাযোগ, দলগত কাজ ও স্থিতিস্থাপকতার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুটি নিয়ামত এমন আছে, যার প্রতি অনেক মানুষ প্রতারিত হয়: স্বাস্থ্য ও অবসর সময়।’ (সহিহ বুখারী, হাদিস: ৬,৪১২)

শরীরচর্চা আমাদের স্বাস্থ্য ও সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে, যা আমাদের দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের জন্য কল্যাণকর।

আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫হাদিসে উল্লিখিত খেলাধুলা

নবীজি (সা.)-এর জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। তিনি নিজে বিভিন্ন শারীরিক কসরতের মতো খেলায় অংশ নিয়েছিলেন এবং এর প্রশংসা করেছেন। কিছু উল্লেখযোগ্য খেলা হলো:

দৌড়: হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি নবী (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় দিয়েছিলাম এবং তাঁকে হারিয়েছিলাম। পরে যখন আমার ওজন বেড়ে গেল, তিনি আমাকে হারিয়েছিলেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২,৫৭৮)

বোঝা যায়, শুধু পুরুষ নয়, নারীদের জন্যও এ ধরনের খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শরীরচর্চা করা অনুমোদিত।

তিরন্দাজি: নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তিরন্দাজি অনুশীলন করো, কারণ এটি তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯১৭)

তিরন্দাজি শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা বাড়ায়।

আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় দিয়েছিলাম এবং তাঁকে হারিয়েছিলাম। পরে যখন আমার ওজন বেড়ে গেল, তিনি আমাকে হারিয়েছিলেন।হজরত আয়েশা (রা.), সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২,৫৭৮

ঘোড়দৌড়: নবীজি (সা.) ঘোড়দৌড়ের প্রশংসা করেছেন এবং এতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছেন। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৩,৫৮৫)

সাঁতার: নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের সাঁতার, তিরন্দাজি এবং ঘোড়সওয়ারি শেখাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৬,৫৮২)

কুস্তি: নবীজি (সা.) একবার নিজেই রুকানা নামক একজন ব্যক্তির সঙ্গে কুস্তি লড়েছিলেন এবং তাঁকে পরাজিত করেছিলেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,০৭৮)

এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে খেলাধুলা শুধু শারীরিকভাবে উপকারী নয়, বরং এটি সুন্নাহের একটি অংশ। নবীজির (সা.) জীবন আমাদের জন্য অনুকরণীয়। আধুনিক বিশ্বে যেখানে সামাজিক বিভেদ ও হারামের প্রলোভন আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে, সেখানে এই খেলাধুলা ও শরীরচর্চা আমাদের দ্বীন ও সমাজকে শক্তিশালী করতে পারে।

আরও পড়ুনসুস্থ জীবনের জন্য নবীজি (সা.)–এর কয়েকটি সুন্নাহ২৯ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ