গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণাধীন হরিপুর-চিলমারী তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর পাশেই খননযন্ত্র দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। মহিলা দলের এক নেতা ও স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী এ কাজে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। অবাধে বালু তোলায় পিলার দুর্বল হয়ে সেতু ধসে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি সেতুর উত্তর ধারে হরিপুরের পাত্রখাতা মৌজায় বালু তোলা হচ্ছে জেনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি বিউটি বেগমকে বালু তুলতে নিষেধ করা করা হয়। ভূমি কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পরও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন।
এদিকে অবাধে বালু তোলায় সেতু এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বেশি দিন চলতে থাকলে যে কোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে বলছেন সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল রহমান প্রামাণিক। 
অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী বিউটি বেগমের ভাষ্য, সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে চরের শতাধিক অসহায় মানুষের বসতভিটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে তাঁর ঘরও রয়েছে। ভেঙে ফেলা এসব ঘরবাড়ি তোলার জন্য নিজেদের জমি থেকে বালু তুলেছেন। প্রশাসন বাধা দেওয়ায় বালু তোলা বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি একাই নন, সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিও দীর্ঘদিন ধরে সেতু এলাকা থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন। প্রশাসন তাকে বাধা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ সময় তিনি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত 
পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও দ্রুত বসতবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানান। 
২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারী উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়। এলজিইডির বাস্তবায়নে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় সেতুটি নির্মাণ করে চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের মার্চ মাসে যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীবাসীর স্বপ্নের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু। ইতোমধ্যে ৯৫ ভাগ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সেতু এলাকায় অবাধে বালু তোলা হলে স্বপ্নের এ সেতু ঝুঁকির মুখে পড়বে– সম্প্রতি সেতু পরিদর্শনে এসে এমন মন্তব্য করেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ।
তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.

ব. ম. শরীয়তুল্লাহ মাস্টার বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণকাজের সূচনা হয়। প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। স্বপ্নের সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এর মধ্যে সেতু এলাকা থেকে বালু তোলা হলে স্বপ্নভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগবে না। বালু তোলার কাজে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। 
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন এ সেতুটি। এ সেতুতে চলাচল শুরু হলে রংপুর থেকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে সময় অর্ধেক বেঁচে যাবে। দেশের এ সম্পদের ক্ষতি যে করবে, সে দলের হলেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বালু তোলার অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা বালু তুলবেন না প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার পরও সেতুর ক্ষতি হয় এমন কাজ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স, সিজিপিএ ২.৫ হলেই আবেদন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অধীনে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ১৬তম ব্যাচে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫) প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রোগ্রামের বিবরণ

১. প্রোগ্রামের মেয়াদ-২ বছর।

২. ক্রেডিট ঘণ্টা-৫১।

৩. কোর্সের সংখ্যা-১৬, প্রজেক্ট পেপার থাকবে একটি।

৪. অনলাইনে আবেদন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

ভর্তির যোগ্যতা

১. যেকোনো বিভাগে ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকতে হবে।

২. সব পাবলিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণি বা ডিভিশন অথবা সিজিপিএ ২.৫ (৪.০০ এর মধ্যে) থাকতে হবে।

২. কমপক্ষে এক বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৩. অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, অডিটিং ও আয়কর বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৪. কাজের অভিজ্ঞতা ICAB, ICMAB, ACCA, গ্লোবাল ICSB ও FCA প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকতে হবে।

আরও পড়ুনইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের ওয়াইপিপি প্রোগ্রাম, আরবি অথবা ফরাসি ভাষায় দক্ষতায় বাড়তি সুযোগ০৩ মে ২০২৫পরীক্ষার বিস্তারিত

১. এমসিকিউ অংশ: গণিত, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান বা সাধারণ জ্ঞান (যেকোনো একটি ব্যবসায় শিক্ষার বাইরের ছাত্রছাত্রীদের)।

২. লিখিত অংশ: ট্রান্সলেশন ও প্যারাগ্রাফ রাইটিং।

৩. মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।

ভর্তির বিস্তারিত তথ্য

১. আবেদনের শেষ তারিখ: ১৭ জুন ২০২৫।

২. ভর্তি পরীক্ষার তারিখ: ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার।

ক. এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার সময়: বেলা ৩টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

খ. মৌখিক পরীক্ষার সময়: বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট।

আবেদনপত্রের মূল্য

১ হাজার ৫০০ টাকা।

আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের এআইটি স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, জেনে নিন সব তথ্য০৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ