বরিশালকে হারিয়ে রংপুরকে হটিয়ে কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম
Published: 1st, February 2025 GMT
বিপিএলের গ্রুপ পর্বের শেষ দিনও ছিল সমীকরণের নানা যোগ-বিয়োগ। জিতলে সুপার ফোর, হারলে বিদায় নিতে হত খুলনা টাইগার্সের। শেষ চারের সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেছে তারা। চট্টগ্রাম কিংসের সামনে ছিল রংপুর রাইডার্সকে হটিয়ে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ।
টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচে সেজন্য টুর্নামেন্টের সেরা দল ফরচুন বরিশালকে হারাতো হতো চট্টগ্রামের। ওই সমীকরণও মিলিয়ে ফেলেছে মোহাম্মদ মিঠুনদের দল। তামিম ইকবালের দলকে ২৪ রানে হারিয়ে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে তারা। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে এই বরিশালের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম কিংস। টানা ৮ জয় পাওয়া রংপুর রাইডার্সকে খেলতে হবে এলিমিনেটর। ৩ ফেব্রুয়ারি খুলনার মুখোমুখি হবে তারা।
শনিবার মিরপুর স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পারভেজ হোসেন ইমন, হায়দার আলী ও শামীম পাটোয়ারির ব্যাটে ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে চট্টগ্রাম। দারুণ এক ফিফটি করেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা চট্টগ্রামে ওপেনার পারভেজ ইমন।
চট্টগ্রাম ৬.
ইমন খেলেন ৪১ বলে ৭৫ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আটটি ছক্কার শট আসে। তিনি চার মারেন মাত্র একটি। শেষে হায়দার ও শামীম ঝড়ো ব্যাটিং করে দলের রান দুইশ’র ওপরে নিয়ে যান। পাকিস্তানি মিডল অর্ডার ব্যাটার হায়দার ২৩ বলে ৪২ রান করেন। তিনটি করে চার ও ছক্কা মারেন। শামীম ১২ বলে ৩০ রান করেন। তিনটি চারের সঙ্গে দুটি ছক্কা হাঁকান।
জবাব ৭ উইকেটে ১৮২ রান করতে পারে বরিশাল। ক্রিজে নেমে শূন্য করে ফিরে যান বরিশাল ওপেনার তামিম। তাওহীদ হৃদয় ৯ রানে সাজঘরে ফিরলে ১৩ রানে ২ উইকেট হারায় গেল আসরের চ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে ডেভিড মালান ও মুশফিকের ব্যাটে ধাক্কা সামলে নেয় বরিশাল। মুশফিক ২২ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান।
পরে ডেভিড মালান ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে জয়ের আশা বেঁচে ছিল বরিশালের। কিন্তু ১৪তম ওভারের শেষ বলে দলের ১২২ রানে আউট হন মালান। ইংলিশ ব্যাটার ৩৫ বলে ৬৭ রান করেন। ছয়টি ছক্কা ও পাঁচটি চারের শট খেলেন তিনি। রিয়াদ শেষ পর্যন্ত খেলে ২৬ বলে ৪১ রান যোগ করতে পারেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।