ছেলের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান থেকে আ.লীগ নেতা আটক
Published: 1st, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের টাইগারপাস এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ছেলের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান থেকে আটক হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ফখরুল আনোয়ার। তিনি ফটিকছড়ি আসনের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ারের ওরফে সোনা রফিকের ছোট ভাই। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলশী থানা পুলিশ তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ আওয়ামী লীগের নেতাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে আটক করা হয়েছে। তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের নাতনির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ফখরুল আনোয়ারের ছেলের আগেই বিয়ে হয়েছিল। শনিবার রাতে ওই বিয়ের বৌ-ভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল টাইগারপাস এলাকার নেভি কনভেনশন হলে। রাত ৯টার দিকে বিয়েতে আগত কেউ আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়টি সমন্বয়কদের অবগত করেন। হঠাৎ করেই শতাধিক যুবক কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়। তারা এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা ফখরুল আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এবং সাবেক এমপি (চট্টগ্রাম-২) খাদিজাতুল আনোয়ার সনিও ছিলেন। খাদিজাতুল আনোয়ার সম্পর্কে ফখরুল আনোয়ারের ভাতিজি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।