আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রথমবারের মতো হিজাব র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে র‍্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না।

র‍্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চেনা রূপে বরিশাল নদীবন্দর, ঈদফেরত যাত্রীদের ভিড়

ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপে বরিশাল নদীবন্দরে সেই চিরচেনা রূপ ফিরে পেয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর থেকেই বরিশাল নদীবন্দরে যাত্রীদের ঢল নামে। কে কার আগে এসে লঞ্চে জায়গা নেবেন, এ নিয়ে শুরু হয় জোর তৎপরতা। শুক্রবার বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ১২টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। এ ছাড়া ভায়া পথে আরেকটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

বিকেলে বরিশাল নদীবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পরিসরের পন্টুনে যাত্রীদের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাই নেই। ঘাটে ১২টি লঞ্চ নোঙর করা। লঞ্চগুলোর নিচতলা, দোতলা, তিনতলা এমনকি ছাদের ডেকে বিছানার চাদর বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন অসংখ্য যাত্রী।

আরিফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ যে অবস্থা তাতে লঞ্চে জায়গা পাব বলে মনে হচ্ছিল না। তাই দুপুরের মধ্যে ঘাটে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি, তখনই সব লঞ্চের ডেক প্রায় পরিপূর্ণ। ভাগ্য ভালো যে একটু জায়গা পেয়েছি। কিছু পরে এলে হয়তো তা-ও পেতাম না।’

ঈদ উপলক্ষে এবার ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়েছিল ৩ জুন রাত থেকে। লঞ্চমালিকদের সূত্র বলছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিসের জন্য তাঁরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। এর অংশ হিসেবে এ সার্ভিসে যুক্ত করা হয় অন্তত ১৬টি লঞ্চ। ঈদের এ বিশেষ যাত্রা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।

সূত্র জানায়, এবার ঈদের দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী গ্রামে ফেরেন। ঈদের পর দুই দিন যাত্রীদের তেমন ভিড় ছিল না। এ সময় চার থেকে ছয়টি লঞ্চ চলাচল করেছে, কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার বন্দর থেকে ১১টি লঞ্চ সরাসরি ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করেছে। আজ যাত্রীদের চাপ আরও বেড়ে গেলে লঞ্চের সংখ্যা বাড়িয়ে ১২টি করা হয়।

অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর নদীপথে যাত্রী সংখ্যা তলানিতে নামে। এ জন্য প্রতিদিন চার থেকে ছয়টি লঞ্চের বদলে দুটিতে নামিয়ে এনে রোটেশন প্রথা চালু করা হয়। তবে ঈদের যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায় বলে অতিরিক্ত লঞ্চ দিয়ে বিশেষ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

তবে ঈদযাত্রায় ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ১ হাজারের জায়গায় এখন ১ হাজার ২০০ টাকা, ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার স্থলে ২ হাজার ২০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকার জায়গায় ৪০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হলেও কেবিনের টিকিট মিলছে না। লঞ্চে গেলে কেবিন নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হলেও কালোবাজারে সিঙ্গেল কেবিন তিন হাজার এবং ডাবল কেবিন ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাকিবুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, শুক্রবার ঢাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কোনো লঞ্চের কেবিন পাননি। কিন্তু কালোবাজারে তাঁর কাছে একটি সিঙ্গেল কেবিন তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। দুই হাজার টাকা দেওয়ার কথা বললেও তা পাননি।

জানতে চাইলে সুরভী শিপিং লাইনসের পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমরা সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার কম নিয়েই যাত্রী পরিবহন করি। এতে অনেক সময় আমাদের লোকসানে থাকতে হয়। কিন্তু ঈদের সময় সরকার-নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে তা কিছুটা পোষাতে হয়।’ কালোবাজারে টিকিট বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে মালিক বা লঞ্চের স্টাফদের সংশ্লিষ্টতা নেই। হয়তো বাইরের কেউ আগে নিজেদের নামে বুকিং দিয়ে এসব করতে পারে। বাইরের কেউ এমন করলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, দেশে নৌপথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি যাত্রী চলাচল করে ঢাকা-বরিশাল পথে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এই নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমে যায়। আগে যেখানে প্রতিদিন ছয় থেকে আটটি লঞ্চ চলাচল করত, এখন প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলাচল করে। তবে ঈদের সময় যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে বরাবরই। এবার তা অনেক বেশি।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী গ্রামে ফিরেছেন। তাই এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া পাচ্ছে লঞ্চগুলোয়। বিশেষ করে ঈদের তিন দিন আগে এবং ঈদের দুই দিন পর থেকে যাত্রীদের এত চাপ যে তাঁদের দম ফেলার সময় নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবারের মতো ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদল
  • প্রথমবার ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
  • প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসার সুযোগ পেল জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
  • ঈদের ছুটি শেষে ব্যাংক খুলেছে, ভিড় নেই তেমন
  • ছুটি শেষে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হচ্ছে কাল
  • প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কতো টাকা পেলো দ. আফ্রিকা?
  • প্রবাসীর ভবন উদ্ধোধন করতে এলেন সৌদি নাগরিক
  • টানা ১০ দিনের ছুটি শেষ, রবিবার খুলছে সরকারি অফিস
  • চেনা রূপে বরিশাল নদীবন্দর, ঈদফেরত যাত্রীদের ভিড়
  • প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম