উড়তে থাকা বোর্নমাউথকে হারিয়েও অস্বস্তিতে লিভারপুল
Published: 2nd, February 2025 GMT
না, বোর্নমাউথ কোন চমক দেখাতে পারল না। মোহাম্মদ সালাহর আরেকটি রেকর্ডের রাতে থামল বোর্নমাউথের স্বপ্নযাত্রা। লিভারপুলের বিপক্ষে হারার আগে সবধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত ছিল দলটি। এই স্বপ্নযাত্রায় তারা হারিয়েছিল ম্যানচেস্টার দুই দল ইউনাইটেড এবং সিটিকে। এমনকি আগের ম্যাচেই টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকা নটিংহ্যাম ফরেস্টকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৫-০ গোলে। তবে লিভারপুলের সামনে আত্মসমর্পণ করতেই হলো বোর্নমাউথকে। মূলত দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সালাহর কাছেই হেরেছে তারা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সালহার জোড়া গোলে বোর্নমাউথের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জিতেছে লিভারপুল। তবে জিতেও স্বস্তিতে নেই অল রেডরা। দ্বিতীয়ার্ধে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড পেশির চোটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে বৃহস্পতিবার টটেনহ্যামের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে ক্যারাবাও কাপ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের খেলতে নামবে আর্নে স্লটের দল।
আরো পড়ুন:
সালাহর ‘একশর’ দিনে লিভারপুলের দাপুটে জয়
ইউরোপিয়ান মঞ্চে সালাহর বিশেষ ‘ফিফটি’
এই মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৩৩ ম্যাচে ২৫ গোল এবং ১৭ অ্যাসিস্ট করা সালাহ বোর্নমাউথের বিপক্ষেও ছুঁয়েছেন একটা মাইলফলক। ম্যাচের প্রথম গোলটি ছিল ‘ইউরোপে সব দল’ মিলিয়ে সালাহর ৩০০তম। জোড়া গোলে যা হয়েছে ৩০১টি। আর অল রেডদের জার্সিতে সালাহর গোলসংখ্যা এখন ২৩৬টি।
প্রতিপক্ষের মাঠে পাওয়া জয়ের সুবাদে লিভারপুল ২৩ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। আর ২৪ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে ৭ নম্বরে রয়েছে বোর্নমাউথ। অন্যদিকে ব্রাইটনের বিপক্ষে জয় পাওয়া নটিংহাম ফরেস্ট ২৪ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানেই রয়েছে। এক ম্যাচ কম খেলা আর্সেনাল, ফরেস্টের সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
অন্যদিকে আরনল্ডের চোটে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অলরেড বস স্লটের কপালে, “ ও আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল তাকে বদলি করতে পারব কিনা। ও (আরনল্ড) কিছু একটা (বাজে) অনুভব করেছে।” চোটের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে স্লট যোগ করেন, “এটা কখনোই ভালো না, যখন কোনো খেলোয়াড় নিজে বদলি হতে চায়।”
আরনল্ডকে স্পার্সের বিপক্ষে পাওয়া যাবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে স্লট জানান, “আমি অবাক হবো যদি ও বৃহস্পতিবার খেলে।”
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আটাত্তরে হার না–মানা ‘টার্মিনেটর’
‘আমি ফিরে আসব’—মাত্র তিনটি শব্দ। কিন্তু বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি চলচ্চিত্রপ্রেমীর কাছে এ তিনটি শব্দ একটি বিশ্বাসের নাম, একটি প্রতিশ্রুতির প্রতীক। আর সেই প্রতীকের জীবন্ত রূপ আরনল্ড শোয়ার্জনেগার। আশির দশকের ভিসিআর কাঁপানো ‘টার্মিনেটর’ থেকে আজকের ডিজিটাল যুগের অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব। তিনি কেবল একজন নায়ক নন, তিনি একজন কিংবদন্তি। সিনেমায় তিনি ছিলেন ভবিষ্যতের যন্ত্রমানব, আর বাস্তব জীবনে হয়ে উঠেছেন হার না–মানা এক মানুষ, যাঁর জীবন কেবল রূপকথা নয়, অনুপ্রেরণার এক অফুরন্ত মহাসাগর। ভক্তরা এমনটাই মনে করেন।
আজ ৩০ জুলাই এই তারকার ৭৮তম জন্মদিন। এই দীর্ঘ জীবনে তিনি যা কিছু স্পর্শ করেছেন, তা সোনা, রুপা ও হীরা হয়ে কিংবদন্তিতে রূপ নিয়েছে। শরীরের গঠন, অভিনয়, রাজনীতি, ব্যবসা—সাফল্যের এমন নানা শিখর তিনি জয় করেছেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে স্বপ্নেরও অতীত। তাঁর জীবনের গল্প যেন এক মহাকাব্য, যেখানে দারিদ্র্য, প্রতিকূলতা আর শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে পরাজিত করে এক তরুণ নিজের ভাগ্য নিজেই লিখেছেন। চুল–দাড়ি সাদা হয়েছে বটে; তবে আগের মতোই যেন যুবক সাবেক বডিবিল্ডার।
শিকড়ের সন্ধানে ‘অস্ট্রিয়ান জীবন’
আরনল্ডের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সালের ৩০ জুলাই অস্ট্রিয়ার থাল নামের এক ছোট্ট গ্রামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সেই সময়ে তাঁর পরিবার ছিল বেশ সাধারণ, যেখানে বিলাসিতা ছিল এক অচেনা শব্দ। তিনি নিজেই তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের ঘরে শৌচাগার ছিল না, গরম পানি ছিল না। কয়েক শ গজ দূরের কুয়া থেকে বালতিতে করে পানি টেনে আনতে হতো। কিন্তু নিজেদের কখনো গরিব মনে হয়নি, কারণ আমাদের চারপাশে সবাই একই রকম ছিল।’
আরনল্ডের বাবা গুস্তাভ শোয়ার্জনেগার ছিলেন স্থানীয় পুলিশপ্রধান এবং একজন কঠোর প্রকৃতির মানুষ। শৈশবে বাবার কঠোর অনুশাসনে বড় হয়েছেন আরনল্ড। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বেশ জটিল। গুস্তাভ চাইতেন, তাঁর ছেলেরাও খেলাধুলায় নাম করুক, কিন্তু শরীরচর্চার প্রতি আরনল্ডের তীব্র আকর্ষণকে তিনি কখনোই সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। এই প্রতিকূলতাই হয়তো আরনল্ডের ভেতরে লুকিয়ে থাকা জেদকে আরও উসকে দিয়েছিল। তিনি বুঝেছিলেন, এই গ্রাম ও পরিচিত পরিবেশের বাইরে তাঁর জন্য এক বিশাল পৃথিবী অপেক্ষা করছে। সেই পৃথিবীর টিকিট হবে তাঁর শরীর।