পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের ওপর হামলা করে, পুলিশের গাড়ি থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পাঁচটার দিকে সুজানগর পৌর সদরের মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ নেতা ওহাবের বাড়িও মথুরাপুর মহল্লায়।

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, “এলাকাবাসী পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।”

আব্দুল ওহাব সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌর মেয়র। পুলিশের দাবি, তিনি গত জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামি।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, আব্দুল ওহাব বাড়ির পাশে মসজিদ থেকে আছরের নামাজ পড়ে বের হন। এসময় সুজানগর থানা পুলিশের একটি দল তাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। সেসময় স্থানীয় জনতার বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করে ওহাবকে ছেড়ে দিতে বলে নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা। পুলিশ রাজী না হলে  গাড়ি থেকে ওহাবকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা।

পুলিশ বুঝিয়ে নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। পরে এলাকার অসংখ্য নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে পুলিশের গাড়ি থেকে আব্দুল ওহাবকে জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এলাকাবাসীর তোপের মুখে অবশেষে ওহাবকে ছাড়াই ফিরে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ। এ সময় ধস্তাধস্তিতে অভিযান দলের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ বিষয়ে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, “সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার সময় আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে যাই। তাকে গ্রেপ্তার করে ফেরার সময় এলাকাবাসী প্রথমে বাধা দেয়। আমরা তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি। কিন্তু স্থানীয়রা তা না মেনে পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।”

এ ঘটনায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে দাবি করে ওসি গোলাম মোস্তফা আরো বলেন, “তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।” 

তবে আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানতে চাইলে “পরে দিচ্ছি” বলে জানান ওসি।

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক ব স স জ নগর ত কর ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ