টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে রাতভর সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান
Published: 3rd, February 2025 GMT
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানা সারারাত ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে সাঁজোয়া যান নিয়ে রাতভর থানা ঘিরে রাখে সেনারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত থানার সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে অবস্থান করেন সেনা সদস্যরা।
এর আগে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালায় তাদের সমর্থকরা। এ সময় টুঙ্গিপাড়া থানার পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলাকারীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদরের বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশে খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আটক সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সন্ধ্যায় খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিফলেট বিতরণ বন্ধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তাদের। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ওই এলাকার মুদি দোকানদার সাফায়েত গাজীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ।
এ সময় পুলিশের গাড়ি আটকে ভাঙচুর করে একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে তাদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। পরে থানার অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে তারাও তোপের মুখে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পৌঁছে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নেন। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা দিতে বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে সারারাত অবস্থান করেছে সেনাবাহিনী। এছাড়াও টুঙ্গিপাড়া থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের থানাসহ সকল পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তাজনিত কারণে সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার চারপাশে অবস্থান করেছে। হামলায় পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ প ল শ সদস য র স মন অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।