গতকাল রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্রিপ্টোডটকম অ্যারেনায় বসেছিল বিশ্ব সংগীতের অন্যতম সম্মানসূচক পুরস্কার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসের ৬৭তম আসর। জাঁকজমকপূর্ণ এই আসরের রেড কার্পেটে নগ্ন হয়ে ক্যামেরায় পোজ দিয়ে বিশ্ব মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বিতর্কিত মার্কিন র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্টের স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেন্সরি।

ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেস্ট র‌্যাপ সং বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কানইয়ে ওয়েস্ট। গতকাল স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেন্সরিকে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। সেসময়ে ৩০ বছরের বিয়াঙ্কার পরনে কালো রঙের পোশাক ছিল।

কালো রঙের কোট পরেই রেড কার্পেটে পা রাখেন বিয়াঙ্কা। হঠাৎ পোশাক খুলে ফেলেন তিনি। এসময় তার পাশেই ছিলেন কানইয়ে। আত্মবিশ্বাসী বিয়াঙ্কা ক্যামেরার সামনে শরীর প্রদর্শন করেন। এই ফ্যাশন ডিজাইনারের কর্মকাণ্ড দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন উপস্থিতি অতিথিরা।

আরো পড়ুন:

গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতলেন যারা

গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই

জানা যায়, এ ঘটনার পর পুলিশ কানইয়ে-বিয়াঙ্কাকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের করে দেয়। আবার কোনো কোনো প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্টান্টবাজি করে নিজেরাই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। এ বিষয়ে কথা বলতে কানইয়ের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেও মন্তব্য পায়নি ডেইলি মেইল।

বিয়াঙ্কার এমন কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কড়া ভাষায় সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। একজন লেখেন, “এই লোকের (কানইয়ে) কাছ থেকে বিয়াঙ্কাকে রক্ষা করা উচিত। সত্যি এটা বিরক্তিকর।” আরেকজন লেখেন, “এটা হতবাক হওয়ার মতো ঘটনা। একই সঙ্গে এটি খুবই দুঃখজনকও। কেউ মেয়েটির মগজ ধোলাই করেছে।”

গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্টের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেন্সরি। তার অভিযোগ, শাশুড়ি আলেকজান্দ্রা সেন্সরির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে চেয়েছিলেন ৪৭ বছরের এই গায়ক।

এ আলোচনায় ভাটা পড়ার আগেই বিতর্কিত র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্ট স্ত্রী বিয়াঙ্কা সেন্সরির ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সমালোচনার মুখে পড়েন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ