গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহর জানাজা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বর্তমান প্রধান নাইম কাসেম। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নাসরাল্লাহ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বরে বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন।

রবিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিতে এক ভাষণে তার উত্তরসূরী নাঈম কাসেম বলেন, “নাসরাল্লাহ এমন এক সময় নিহত হন যখন পরিস্থিতি কঠিন ছিল। যার ফলে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাকে অস্থায়ীভাবে দাফন করা হয়।”

কাসেম জানান, তারা এখন নাসরাল্লাহ এবং নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর ইসরায়েলি হামলায় নিহত হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ নেতা হাসেম সাফিয়েদ্দিনের জন্য ‘বৃহৎ জনসমাগমের মাধ্যমে’ বড় আকারে জানাজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং মর্যাদার সঙ্গে পুনরায় দাফন সম্পন্ন হবে। 

কাসেম প্রথমবারের নিশ্চিত করেন, নাসরাল্লাহর উত্তরসূরি হিসেবে সাফিয়েদ্দিন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই তিনি নিহত হন। তাই সাফিয়েদ্দিনকেও হিজবুল্লাহর মহাসচিব উপাধি দিয়ে দাফন করা হবে।

তিনি বলেন, “নাসরাল্লাহকে রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে পুরোনো ও নতুন বিমানবন্দরের মধ্যবর্তী এলাকায় দাফন করা হবে। আর সাফিয়েদ্দিনকে সমাহিত করা হবে তার নিজ শহর দেইর কানুনে।”

গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। ওই হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। এরপর অক্টোবর শেষ দিকে উপ-প্রধান নাঈম কাসেমকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করে হিজবুল্লাহ।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ