আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস রাজশাহীর কর্ণধারের
Published: 3rd, February 2025 GMT
টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেও খেলোয়াড়দের এখনো টাকা দেয়নি দুর্বার রাজশাহী। টাকার অপেক্ষায় তাদের কয়েকজন বিদেশি হোটেল ছাড়তে পারছিলেন না। একের পর এক বিতর্কিত কাণ্ডের পর এবার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দুর্বার রাজশাহী মালিক শফিকুর রহমানকে। জিজ্ঞাসাবাদে বারবার প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করেছেন তিনি। ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিন কিস্তিতে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দেবেন বলে জানিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির কর্ণধার। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এই তথ্য।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৩,৭, ১০ ফেব্রুয়ারি—তিন কিস্তিতে দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটারদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে। বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সঙ্গে জড়িত সকলের পাওনা বুঝিয়ে দিতে আজ সকালে বিতর্কিত মালিক শফিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিজের দোষ স্বীকার করে ২৫ শতাংশ হারে তিন দফায় পাওনা টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন। যদি শফিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্বার রাজশাহী তার দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি লঙ্ঘন করে টুর্নামেন্ট তথা রাষ্ট্রের সম্মান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বলা হয়, দলটির এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে এলে সমাধানের জন্য শফিকুর রহমানের সঙ্গে আলোচনায় বসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও শফিকুর রহমান রক্ষা করেননি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘উপদেষ্টা মহোদয়কে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি, বরং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে অনিয়মের নানা অভিযোগ।’
দুর্বার রাজশাহী মালিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার।’ এছাড়া বিপিএলের নানারকম অনিয়ম খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) একটি ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’ গঠন করেছে।
বিপিএলে এবার ব্যাংক গ্যারান্টি না নিয়েই দুর্বার রাজশাহীকে দল দেওয়া হয়। ফরচুন বরিশাল ছাড়া ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়নি আর কেউ। নতুন আসা রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু থেকেই জড়ায় বিতর্কে। খেলোয়াড়দের কোন টাকা না দেওয়ায় একবার তারা অনুশীলন বর্জন করেন। পরে চেক দেওয়া হলে সেই চেক একাধিকবার বাউন্স করে। বিদেশি খেলোয়াড়রা টাকা না পেয়ে মাঠে যাননি এক ম্যাচে। নিয়ম ভঙ্গ করে আয়োজিত হয় ম্যাচ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।”
উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।”
তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।”
তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।”
উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”
পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।”
তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস