ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার
Published: 3rd, February 2025 GMT
ক্যান্সার কোনো নির্দিষ্ট কারণে হয় না। চিকিৎসকদের ভাষায় এটি একটি ‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। মূলত তেল-মসলাদার খাবার, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও ময়দা খেলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। শরীরের কোনো কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে রোজ খাবারে রাখতে পারেন কয়েকটি খাবার।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ কিউয়ি ফল খেতে পারেন। এই ফল প্রাকৃতিকভাবে ডিএনএ মেরামত করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কেমোথেরাপির পর কিউয়ি ফল রোগীর শরীরে খুব ভালো কাজ করে।
মাশরুম: ক্যান্সার প্রতিরোধক খাবারের নামের তালিকায় প্রথমেই যে খাবারের নাম চলে আসে, তা হলো মাশরুম। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই খাবার ডায়েটলিস্টে রাখতে পারেন।
কোলিনসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি: ক্যান্সার প্রতিরোধে খেতে পারেন কোলিনসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি। এ শাকসবজির মধ্যে রয়েছে ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শর্ষেশাক, মুলা ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব শাকসবজি ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে।
এপিজেনিন যৌগসমৃদ্ধ খাবার: যেসব খাবার এপিজেনিন যৌগসমৃদ্ধ, সেগুলো শরীরে ক্যান্সারের বীজকে মেরে ফেলতে পারে। তাই শরীরে সুরক্ষাকবচ হিসেবে এপিজেনিন যৌগসমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। চেরি, আঙুর, ধনেপাতা, পার্সলে পাতা, আপেলের মতো খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে এপিজেনিন যৌগ রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এসব খাবার স্তন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমায়।
কিউয়ি ফল ছাড়াও ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ যে কোনো ফল যেমন– কমলালেবু, পাতিলেবু, আঙুর ডায়েটে প্রাধান্য দিন। ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
গ্রিন টি: শরীরের কোষগুলোর সুরক্ষার জন্য পান করতে পারেন গ্রিন টি। এতে রয়েছে ইজিসিজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের প্রদাহ দমন করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
রসুন: ক্যান্সার প্রতিরোধে রসুনের বিকল্প নেই। রসুনের অ্যালিসিন নামক যৌগ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে। এটি মূলত ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাই রান্নায় রসুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। দুপুরের খাবারে এক কোয়া রসুনও রাখতে পারেন।
এসব খাবার নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে সহজে ক্যান্সারের বীজ বাসা বাঁধতে পারে না। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রতিদিন এসব খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সব খ ব র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।