আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে নবগঠিত নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমের পদ বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা আবুল কাশেমের কুশপুতুল দাহ করেন। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের দত্তপাড়া এলাকায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সমাবেশে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রচার সম্পাদক জুয়েল রানা বলেন,  “নতুন যে জেলা বিএনপির কমিটি হয়েছে, সেখানে আবুল কশেম নামে একজনকে সদস্য করা হয়েছে। তিনি যে বিএনপি করেন এটাই আমরা জানি না। তাকে গত ১৭ বছরে দলীয় কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে দেখা যায়নি। তাকে কমিটিতে রাখায় হতাশ হয়েছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাই আমরা বলতে চাই, ১ সেকেন্ডের জন্যও কাসেমকে দত্তপাড়ার মাটিতে দাঁড়াতে দেব না। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছে আবেদন জানাই, দ্রুত নাটোর জেলা কমিটি সংশোধন করে কমিটিতে ত্যাগীদের স্থান দেওয়া হোক।”

আরো পড়ুন:

স্টল বরাদ্দের দাবিতে বরিশালে ফল ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

নাটোরে বিএনপির ৩ নেতাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

সদর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোন্তাজ আলী প্রামাণিক বলেন, “আওয়ামী লীগের সর্বশেষ নির্বাচনে শিমুলের নির্বাচন করেছেন কাশেম। আওয়ামী লীগকে অর্থ যোগানদাতা ছিলেন তিনি। অথচ তাকে করা হয়েছে জেলা বিএনপির সদস্য। ১৭ বছর কোথাও তাকে দেখিনি। তিনি কীভাবে পদ পেলেন। আমরা তাকে নাটোরের মাটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।” 

এ সময় জেলা শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি হানিফ মোল্লা, বড় হরিশপুডর ইউনিয়ন শ্রমিকদের সভাপতি গোলাপ মোল্লা, দত্তপাড়া শাখা অফিসের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্য আবুল কাশেম বলেন, “২০১৩ সালে দিনাজপুরে দুলু (রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু) সাহেবের নির্দেশে আমার ওপর হামলা হয়েছিল। পরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হয়েছিল। বিষয়টি তারেক রহমানসহ সবাই জানতেন। পরে ম্যাডাম খালেদা জিয়া আমাকে বলেছেন, এখন থেকে তোমার আর নাটোরে যাওয়ার দরকার নেই। তুমি ঢাকায় রাজনীতি করো। আমার বর্তমান পোস্ট হচ্ছে, আমি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকে পুরো গাজীপুরের দায়িত্বে রয়েছি আমি।” 

ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নারী ক্রিকেটেও ফিক্সিং কলঙ্ক

জাতীয় দলের সতীর্থকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়ে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হলেন সোহেলী আক্তার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ক্রিকেটে দুর্নীতি প্রতিরোধের পাঁচটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা।

২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত নারী টি২০ বিশ্বকাপ চলাকালে বাংলাদেশ অলরাউন্ডার লতা মণ্ডলকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পেস বল ডেলিভারির পর হিট উইকেট (আউট) হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল লতাকে। বিনিময়ে জুয়াড়ির কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন সোহেলী।

বান্ধবীর প্রস্তাবে রাজি না হয়ে লতা উল্টো রিপোর্ট করেন আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগ (এসিইউ) কর্মকর্তার কাছে। বিশ্বকাপ শেষে ঢাকায় সোহেলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এসিইউ কর্মকর্তা। সে সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও এসিইউ তদন্ত দলের অনুসন্ধানে দোষী প্রমাণিত হন তিনি। শেষ পর্যন্ত নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় পাঁচ বছর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হবে এ শাস্তি।

২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় সোহেলীর। তিনি শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর নারী এশিয়া কাপে। ক্যারিয়ারে দুটি ওয়ানডে ও ১৩টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ফিক্সিংয়ে জড়িত হওয়ার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন।

আইসিসি জানায়, ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ সামনে রেখে একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন সোহেলী। ভয়েস মেসেজ দিয়ে সে খেলোয়াড়কে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়াতে চেষ্টা করেন। মূলত লতা রাজি না হওয়ায় জোরাজুরি করেছিলেন সোহেলী। ২০ লাখেরও বেশি টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। রাজি হলে মেসেঞ্জার থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

যদিও অভিযোগ ওঠার পর সোহেলী সমকালকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা যে ফিক্সিংয়ে জড়িত নন, তা প্রমাণ করতে তাঁর চাচাতো ভাইয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলন। এসিইউ কর্মকর্তাকেও সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তথ্য গোপন, তদন্তে বিলম্ব করার অভিযোগও আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাঁচটি অভিযোগ মেনে নেওয়ায় শুনানির প্রয়োজন হয়নি বলে জানায় আইসিসি। আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে হেরে গেলে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল।

ছেলেদের পর ফিক্সিং ইস্যুতে কলঙ্কিত হলো মেয়েদের ক্রিকেটও। কলঙ্কের সে দাগ লাগালেন সোহেলী। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের কাছে বার্তা গেল নারী ক্রিকেটারকেও নজরদারিতে রাখতে হবে বিসিবিকে। ছেলেদের মতো মেয়েদের ঘরোয়া ক্রিকেটেও রাখতে হবে দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তা।

ফিক্সিংয়ের অপরাধে বাংলাদেশে প্রথম নিষিদ্ধ হন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০১৩ সালের বিপিএলে চট্টগ্রামে স্পট ফিক্সিং করেন তিনি। ২০১৯ সালে সাকিব আল হাসান এক বছর নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার তথ্য গোপন করে। টি১০ লিগে ৭৫০ ডলারের বেশি মূল্যের মোবাইল ফোন নেওয়ার অপরাধে নিষিদ্ধ হয়েছেন নাসির হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারী ক্রিকেটেও ফিক্সিং কলঙ্ক