ক্রিকেটপ্রেমীদের আবেগ ও উত্তেজনা প্রতিচ্ছবি ভারত-পাকিস্তান মহারণ। এই দুই দল মখোমুখি হওয়া মানেই যে কোন স্তরের এবং যে কোন পর্যায়ের ক্রিকেটে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা। ঠিক এই দিকটা বিবেচনা করেই বর্তমানে বৈশ্বিক বা মহাদেশীয় আসরে এই দুই দলকে একই গ্রুপে রাখা হয়। এবারও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছেন ভক্ত-সমর্থকরা। আর সেই উন্মাদনারই প্রতিফলন দেখা গেল টিকিট বিক্রিতে। মাত্র ৫০ মিনিটেই শেষ হয়ে গেল সব টিকিট!

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচগুলোর জন্য সোমবার থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সাধারণ আসনের টিকিটের মূল্য ছিল ১২৫ দিরহাম (প্রায় ৪,২০০ টাকা), তবে এ ম্যাচের প্লাটিনাম লাউঞ্জের টিকিটের দাম উঠেছে ২,০০০ দিরহাম (প্রায় ৬৬,০০০ টাকা) এবং গ্র্যান্ড লাউঞ্জের টিকিটের মূল্য ৫,০০০ দিরহাম (প্রায় ১,৬৫,০০০ টাকা)। কিন্তু এই টিকিটও যেন সোনার হরিণ!

আরো পড়ুন:

মোদিকে হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

পশ্চিমবঙ্গে ৪ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

 

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ২৫,০০০ হলেও অনলাইনে টিকিট কেনার ওয়েবসাইটে একসাথে ভিড় জমান অন্তত দেড় লাখ দর্শক। একই দৃশ্য দেখা গেছে দুবাইয়ের টিকিট বিক্রির কেন্দ্রগুলোতেও। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকেই টিকিট না পেয়ে হতাশ হন। 
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচই নয়, ভারত-বাংলাদেশ এবং ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের টিকিটও দ্রুত বিক্রি হয়ে গেছে। অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকিট পাচ্ছেন না সমর্থকরা।

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক ও ক্রীড়াগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এই ম্যাচ সবসময়ই থাকে আলাদা আলোচনায়। পরাজয়ে কান্না, জয়ে রাস্তায় নেমে উদযাপন—এটাই দুই দেশের ক্রিকেট ভক্তদের আবেগের চিত্র। তবে শেষ হাসি কে হাসবে? ভারত নাকি পাকিস্তান? উত্তর মিলবে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে মাঠের লড়াইয়ে।
 

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ