যে কারণে হঠাৎ বিপিএল ছাড়লেন ইয়াশা সাগর
Published: 6th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শুরুতে চিটাগাং কিংসের হয়ে আলোচনায় আসেন কানাডিয়ান মডেল ও উপস্থাপিকা ইয়াশা সাগর। ব্যাট-বলের লড়াইয়ের বাইরে দলটির প্রচারণায় ছিলেন তিনি। তবে প্লে-অফ পর্ব শুরুর পর থেকেই তাকে আর দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে তার অনুপস্থিতি নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়। এরপরই জানা যায়, টুর্নামেন্ট শেষের আগেই বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন ইয়াশা সাগর। পরে জানা যায়, পারিশ্রমিক নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কিছুটা ঝামেলা চলছিল। উকিল নোটিশও দিয়েছিল চট্টগ্রাম মালিকপক্ষ। এরপরই চলে যান তিনি।
ফ্র্যাঞ্চাইজিটির স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন এই নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১০ ডিসেম্বর চিটাগাং কিংসের সঙ্গে ইয়াশার চুক্তি হয়েছিল, যেখানে বেশ কিছু শর্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তিনি চুক্তির ৯ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছেন। ওই ধারায় স্পন্সরশিপ বার্তা, বিজ্ঞাপন এবং বাণিজ্যিক অংশীদারদের প্রচারের শর্ত উল্লেখ ছিল, যা তিনি মানেননি। এমনকি স্পন্সর ডিনার এবং নির্ধারিত প্রোমোশনাল শুটেও উপস্থিত হননি, যা ফ্র্যাঞ্চাইজির আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়েছে।
তবে ইয়াশার এজেন্টের দাবি ভিন্ন। গণমাধ্যমে তিনি দাবি করেছেন, চুক্তির বাইরেও ইয়াশাকে দিয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করানোর প্রস্তাব দিয়েছিল চিটাগাং কিংস, যা তিনি পেশাদারিত্বের কারণে প্রত্যাখ্যান করেন। এছাড়া চুক্তির ৫৫ শতাংশ পারিশ্রমিক তিনি পেয়েছেন।
বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিত উপস্থাপনা করেন ইয়াশা সাগর। বাংলাদেশে এসেছিলেন এই প্রথম। কিন্তু ফিরলেন তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে। এর আগে কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে উপস্থাপনা করে নজরে আসেন। ইয়াশা সাগরকে ছাড়াও চিটাগং কিংস মেন্টর হিসেবে পাকিস্তানের সাবেক তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদিকে আনে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আফ্রিদিকে পাওনা পরিশোধ না করার সংবাদও এসেছে। এর আগে পারভেজ হোসেন ইমনকে এক পয়সাও পরিশোধ না করায় শিরোনামে আসে চিটাগং কিংস। তখন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক সামির কাদের জানিয়েছিলেন, পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট না হওয়ায় টাকা দেওয়া হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।