সাংবাদিক হত্যাচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি
Published: 7th, February 2025 GMT
খুলনার ডুমুরিয়ায় নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর শ্রীনাথ রায় নামে আড়াই বছর বয়সের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় একটি মৎস্য ঘেরের পানিতে ভাসমান অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ভাণ্ডারপাড়া ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শ্রীনাথ একই গ্রামের কৃষক প্রভাষ রায়ের ছেলে।
মঙ্গলবার সকালে শিশুটি তার মায়ের পেছনে পেছনে হেঁটে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি মাছের খামারে যায়। এর আধা ঘণ্টা পর শিশুটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ওই মৎস্য ঘেরের পানিতে একটি শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
ডুমুরিয়া থানার এস আই নিয়াজ আহম্মেদ বলেন, শিশুটি পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হবে। শিশুর স্বজনরা থানায় কোনো অভিযোগ দেননি।
পটুয়াখালীর দশমিনায় মো.
মঙ্গলবার সকালে গাড়ি নিয়ে বের হন ঈসা। রাতে বাড়ি না ফেরায় তাঁকে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। বুধবার দশমিনার চাঁদপুরা গ্রামের বাসিন্দা মাহাতাব হোসেন ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে টংঘরের বেড়ায় রক্ত দেখতে পান। কৌতূহলবশত ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখেন খড়কুটা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মহাজনকে জানান। মহাজন ইউপি সদস্যকে জানালে তিনি থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে স্বজনরা লাশ শনাক্ত করেন।
দশমিনা থানার উপপরিদর্শক জাকির হোসেন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিহতের মা সাহিদা বেগম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর ইউনিয়নে জসিম উদ্দিন (১৭) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য চণ্ডিপুর গ্রামের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতুর সংযোগ সড়কের পাশে পতিত জমি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জসিম মধ্য চণ্ডিপুর গ্রামের আব্দুস ছালাম মিয়ার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় জসিম বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফেরেনি। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১ জন ডাক্তারে চলছে হাসপাতাল!
দীর্ঘদিন ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে বাড়তি সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে কোনো রকমে চলছে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কাজ।
এদিকে, চিকিৎসক সঙ্কটে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের দাবি তাদের।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দর, তিনটি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে কর্মরত রয়েছে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার শ্রমিক। এসব শ্রমিকসহ কলাপাড়া ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাঙ্গাবালীর প্রায় চার লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল এই কলাপাড়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল।
বছরের অধিকাংশ সময়ে রোগীতে ভরা থাকে হাসাপাতালটি। অনেক সময় ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে রোগীরা চিকিৎসা নেয় হাসপাতালের মেঝে কিংবা করিডোরে। অথচ এ হাসাপতালে চিকিৎসকের ৩৬টি পদের মধ্যে ২৭টি পদই শূন্য। বাকি ৯ জনের মধ্যে দুজন ঢাকায় সংযুক্তিতে, দুজন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ও একজন রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।
বর্তমানে মাত্র চার জন চিকিৎসক রয়েছেন এ হাসপাতালে। এর মধ্যে উপেজলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয় দাপ্তরিক কাজে। এছাড়া দুজন রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে। এরমধ্যে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ এবং অপরজন গাইনি ও অবস বিশেষজ্ঞ। যাদের কাজ শুধুমাত্র রেফার অর্থাৎ জটিল রোগের শিশু এবং গাইনি বিষয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া। এছাড়া শুধুমাত্র একজন রয়েছেন মেডিকেল অফিসার। যার আউটডোর, ইনডোর ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা।
সীমবদ্ধার মধ্যে এই চার চিকিৎসক সময় ভাগ করেই চালাচ্ছেন পুরো ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। তবে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে চার চিকিৎসকই এখন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।
এদিকে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা।
কলাপাড়া হাসাপতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী মুরাদ হোসেন বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে জ্বর ও শাসকষ্ট নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছি। আজ সকালে শুধু একজন ডাক্তার এসে দেখে গেছে। এখানে ডাক্তারের সংকট থাকার কারণে আমরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছি না।”
শিশু ওয়ার্ডের ভর্তি রোগী জুবাইদার (৫ মাস) নানি হোসনেয়ারা বলেন, “এখানে শুধু একজন শিশু রোগের চিকিৎসক রয়েছেন। তিনি এতো শিশু রোগীর কীভাবে সেবা দিবেন? নার্সরা তো সব বোঝে না। এখানে নাতীকে ভর্তি করানোর পর আমাদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে বেশ কয়েকবার ডাক্তারের পার্সোনাল চেম্বারে গিয়ে ওষুধ লিখে নিয়ে আসতে হয়েছে। আমরা এ হাসপাতালের চিকিৎসক সঙ্কটের সমাধান চাই।”
কলাপাড়া হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি ও অবস) ডা. শরীফ শায়লা ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে প্রচুর চিকিৎসক সংকট। যার কারণে অতিরিক্ত সময় ধরে সেবা দিতে গিয়ে আমি নিজেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি। শরীরে জ্বর উঠেছে। আপনাদের আসার খবর পেয়ে ওষুধ খেয়ে জ্বর কমিয়ে এখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। আসলে এভাবে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।”
অপর জুনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়াট্রিক্স) ডা. কামরুননাহার মিলি বলেন, “আমাদের তো আসলে আউটডোরে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা না। তারপরও সঙ্কটের কারণে দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত সময় ধরে সেবা দিতে গিয়ে আমি নিজেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকার দিক বিবেচনা করা হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক সঙ্কট সমাধানের অনুরোধ জানাচ্ছি। এতো সঙ্কটে আসলে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।”
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুনায়েদ হোসেন লেলিন বলেন, “চিকিৎসক সঙ্কটের ব্যাপারে বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে- এমনকি চিঠি দিয়েও এর সুরাহা পাইনি।”
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, “শুধু কলাপাড়া নয়, পুরো জেলা জুড়েই চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি দ্রুত এর সমাধান হবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস