গাজীপুরের সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ফোন কল রেকর্ডিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের টিম রেডি, রাজধানীতে রাতে মানুষ ঘুমাতে পারবে না। কোথা হতে কি করতে হবে, আল্প সময়ের মধ্যে আপনারা মূল ম্যাসেজটা পাইবেন। আমরা প্রমাণ করে দিতে চাই, আমরা কার সৈনিক।” 

গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভাইরাল হওয়া ছয় মিনিটের ফোন কলটিতে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “কয়েকটা মিনিট আমার কথা ধৈর্য ধরে শুনেন। এখানে সম্রাট ভাই আছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আমাদের সেভেন্টি থেকে এইট্টি পারসেন্ট টিম আছে। আমাদের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে শৃঙ্খলার মাধ্যমে থাকতে চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট, যে রাজধানীতে দিনের বেলা স্বাধীনভাবে আমরা ঘুরতে পারব না, চলতে পারব না। আমাদের চূড়ান্ত ডিসিশন সেই রাজধানীতে রাতের বেলায় মানুষ ঘুমাতে পারবে না।” 

তাকে আরো বলতে শোনা যায়, “আমাদের মূল নেত্রী যে ডিসিশন দেবে, পরামর্শ ক্রমে সেটাই করব। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, আপনারা আমাদের চূড়ান্ত খেলার মধ্যে, সিদ্ধান্তের মধ্যে যে যেখানে যে অবস্থায় থাকবেন পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে রাতে আসবেন। মরলে সবাই মরি, বাঁচলে সবাই বাঁচি। মৃত্যু আমাদের নির্ধারিত আছে, কিন্তু কুলাঙ্গারদের কাছে যেনো মারা না যাই। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যে যেনো চড়-থুতু না পড়ে।” 

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের প্রয়াত এমপির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

লক্ষ্মীপুরে চার আ.

লীগ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন 

তিনি বলেন, “ঘরের মধ্যে থাইকা আমাদের মৃত্যুর মতো অবস্থা হইতাছে। আপনারা আলোচনা করেন যার যার মতো। কেউ জাতীয় নেতা, কেন্দ্রীয় নেতা হতে যাইয়েন না, লাভ নেই। আমরা ফল পাইছি, নেত্রী এখন মাঠ পর্যায়ের লোক খুঁজছে। পদ দেইখেন না, যারা আর্দশের লোক, আমাদের ত্যাগী লোক, তাদের সামনে দেন। যারা দলের জন্য কাজ করে, জীবন দেয় তাদেরকে নিয়ে আর তিরস্কার কইরেন না। পদ বড় না, আর্দশ ও ব্যক্তিত্ব বড়।” 

“৭৭ বছরের পুরনো দল। আমাদের ছাত্র সংগঠন যারা করে তারা বিগত দিনে বিরোধী দল দেখে নাই। তাদেরকে এখন বুঝান, কৌশলগত ট্রেনিং দেন। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করা যাবে না। পাড়া, মহল্লায় ফোন দিয়ে স্যরি বলে বলুন, আমরা এই সমাজের মানুষ। জাতির পিতা আমাদের দেশটা দিয়ে গেছেন, আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই” যোগ করেন তিনি। 

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সবার নামে মার্ডার কেস দিয়ে রাখছে। এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না। আমরা ১৬ বছর বহু দিছি, আর দরকার নাই। এখন কাজের দরকার। ঢাকা জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে যোগাযোগ করছি। সময় ও পরিস্থিতিতে যা করার দরকার তাই করব। সেজন্য আমরা ছোটভাই বড়ভাই যারা আছি একসঙ্গে করতে চাই। অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা মূল ম্যাসেজটা পাইবেন, কোথা হতে কি করতে হবে। আমরা প্রমাণ করে দিতে চাই, আমরা কার সৈনিক। আমাদের জাতির পিতা ঘুমিয়ে আছেন, উনি কষ্ট পাচ্ছেন। এজন্য নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ না রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজটা শুরু করতে চাই। কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, একটা রেজাল্ট পাবেন। কাজে কিছুটা গ্যাপ আছে, কয়েকদিনের মধ্যে সেটা পূরণ করব। বেঁচে থাকলে সবার সঙ্গে দেখা হবে আর মৃত্যু হলে বেহেশতে দেখা হবে।” 

ফোন কলের স্ক্রিনে জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও রফিকুল হাসান (ইউপি চেয়ারম্যান), তরিকুল (ইউপি সদস্য), নেত্রকোনা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আতিকুর রহমান, কাফি উদ্দিন, বাদশা, পঞ্চগড়ের উপপ্রচার সম্পাদক মারুফ রহমান, নাঈম দুর্গাপুর উপজোল, রায়ঘাটির সাধারণ সম্পাদক নাহিদ, সাদিয়া জাহান সাবা, তাজুল ইসলাম সভাপতি জাতীয় শ্রমিকলীগ মেহেরপুর, ইকরামসহ অনেকের নাম দেখা যায়। 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ জ হ ঙ গ র আলম আম দ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ