গাছ থেকে বরই পাড়ার প্রতিবাদ করায় সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার শরীরে গরম পানি নিক্ষেপ
Published: 7th, February 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে গাছ থেকে বরই পাড়ার প্রতিবাদ করায় সত্তরোর্ধ্ব মানসিক প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধার শরীরে গরম পানি নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই বৃদ্ধার শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ ঝলসে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ওই বৃদ্ধের নাম জাহানারা বেগম (৭১)। তিনি ডুমুরিয়া গ্রামের প্রয়াত মনসুর আলীর মেয়ে। ওই গ্রামেই তিনি বাবার বাড়িতে থাকেন। তাঁর বিয়ে হয়েছিল, তবে কোনো সন্তান নেই। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ের পরপরই স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছিল।
পলি আক্তার নামে এক তরুণীর বিরুদ্ধে এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পলি পাশের বাড়ির মোশারফ হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃদ্ধ জাহানারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক প্রতিবন্ধী। আজ দুপুরে তাঁদের গাছ থেকে বরই পেড়ে নিয়ে যান পাশের বাড়ির পলি আক্তার ও তাঁর ছোট ভাই। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধা পলি আক্তারকে গালমন্দ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পলি আক্তার ও তাঁর ছোট ভাই ফুটন্ত গরম পানি এনে জাহানারা বেগমের মুখসহ শরীরে নিক্ষেপ করেন। এতে বৃদ্ধার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে জড়িত দুজন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যান। পরে ওই বৃদ্ধার ভাইয়ের পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহানারা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। তবে পরিবারের লোকজন কুমিল্লা না গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারজানা আক্তার বলেন, ‘গরম পানি নিক্ষেপের কারণে ওই বৃদ্ধার মুখের এক পাশসহ শরীরের কয়েকটি স্থানে ঝলসে গেছে। সব মিলিয়ে শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ ঝলসে গেছে। আমরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পলি আক্তারের বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে না বুঝে এমন ঘটনা করে ফেলেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা মর্মাহত। জাহানারা বেগমকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমি নিজেও সঙ্গে আছি।’
জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তবে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রী বিষপান করেছেন। তাদের মধ্যে রবিবার (১৫ জুন) সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্বামী মারা গেছেন। আর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন স্ত্রী।
এর আগে, শনিবার রাতে উপজেলার রঘুনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম আলামিন শেখ (২৮)। তার স্ত্রী সাথী খাতুন (২২)। এই দম্পতির দুই বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্বজনেরা জানান, প্রায় ছয় বছর আগে আলামিন শেখের সঙ্গে সাথী খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলে আসছিল। সর্বশেষ স্থানীয় এক কিশোরের সঙ্গে সাথী খাতুনের পরকীয়ার অভিযোগ উঠে।
আরো পড়ুন:
ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
পঞ্চগড় সীমান্তে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
শনিবার দুপুরে এ নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর জেরে বিকেলে বিষপান করেন সাথী। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা।
স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে রাত ১০টার দিকে বাড়িতে গিয়ে বিষপান করেন আলামিন শেখ। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাথী খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘‘আমার শাশুড়ি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে খারাপ বানিয়েছে। আমার সঙ্গে কোনো ছেলের সম্পর্ক নেই। লজ্জায় বিষ খেয়েছি।’’
তবে, পুত্রবধূর অভিযোগ নাকচ করেছেন আলামিনের মা ফাহিমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি স্থানীয় এক কিশোরের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছেলের বউকে দেখতে পাই। এরপর থেকেই ছেলের সঙ্গে সাথীর ঝামেলা চলছিল।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘‘খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মরদেহটি বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব