সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে স্থানীয়রা। এতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।  

শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকায় এ হামলার ঘটনা হয়েছে । 

শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, ধানমন্ডিতে ভাঙচুরের ঘটনার পর আমরা গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করেছি কোথাও ভাঙচুর হলে আমাদের জানাতে। শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হয়। দ্রুত ১৫ জন ঘটনাস্থলে চলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় লুটপাট হচ্ছে। এতে বাধা দিলে পেছন হতে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রাম দাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে বেধড়ক পেটায়, কুপিয়ে জখম করে। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও পেটায়। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক নাবওল আহমেদ বলেন, “আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনার দুই ঘণ্টা পর এসেছে। যারা হামলা করেছে তারা সবাই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের লোক। তাদের হামলায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ১০-১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আমরা এই হামলার বিচার চাই, অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।” 

এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়েছে গুরুতর আহত এমন ৫ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- শুভ শাহরিয়া (১৬), ইয়াকুব (২৪), সৌরভ (২২), কাশেম (১৭) ও হাসান (২২)।

স্থানীয়রা জানায়, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হকের ধীরশ্রম এলাকায় তার বাড়িতে শতাধিক জনতা হামলা চালায়।  তারা মোজাম্মেল হকের বাড়িটি ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে হামলা করতে যাওয়া জনতাকে স্থানীয়রা ঘিরে ফেলে। পরে স্থানীয়রা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে  হামলা করতে যাওয়া জনতাকে ধাওয়া করে। এ সময় তারা বেশ কয়েকজনকে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ১৫ জনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি মো.

আরিফুর রহমান বলেন, “সাবেক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় হামলায়  বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

এদিকে আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী দোসর ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের লোকজন হামলা চালিয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় নাগরিক কমিটি। আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় ডিসি অফিস চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছে তারা। সবাইকে এতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি বলেছে, গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর খুনি আ ক ম মোজাম্মেল ও জাহাঙ্গীর এবং আওয়ামী দোসরদের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে বিচার নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। 

ঢাকা/রেজাউল/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ম ম ল হক র ব ম জ ম ম ল হক র ক মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে খুলছে ৪ বন্ধ কারখানা

নয় দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের চারটি কারখানায় চালু হচ্ছে। 

বেতন, বোনাসসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনের মুখে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে চারটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু 

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

কারখানাগুলো হলো দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিল লিমিটেড, সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড ও ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড।

সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পরিচালক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘২৬ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা কারখানা চালুর দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের কারখানায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে।’’ 

ইপিজেড সূত্র জানিয়েছে, বন্ধ চারটি কারখানায় সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। 

উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার জানান, শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে বন্ধ থাকা চার কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ দিন থেকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম শুরু হবে এবং শ্রমিকদের যথাসময়ে কারখানায় আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উত্তরা ইপিজেডের ২৭টি কারখানায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

ঢাকা/সিথুন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ