Samakal:
2025-08-01@04:59:00 GMT

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আইসিসি

Published: 8th, February 2025 GMT

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আইসিসি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে টার্গেট করা হচ্ছে দাবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তিনি এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। আদেশে হুমকি দেওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ তার মিত্রদের বিরুদ্ধে যারা তদন্ত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন বাস্তবিক ও শক্ত পদক্ষেপ নেবে। এ ধরনের তদন্ত জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। 

গতকাল শুক্রবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ ধরনের বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত বিরল। গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকারের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি। এ সিদ্ধান্তকে বিশ্বব্যাপী স্বাগত জানানো হলেও কড়া সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।

ট্রাম্প তাঁর আদেশে বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে এর প্রারম্ভিক তদন্ত ভয়ানক নজির স্থাপন করেছে। এর সঙ্গে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এতে তাদের অপমানিত হওয়া বা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। এটা করার কোনো আইনি বৈধতা আইসিসির নেই। তিনি আইসিসির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারেরও অভিযোগ তোলেন।

ট্রাম্প প্রশাসন যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার মধ্যে আছে– আইসিসি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ ক্রয় করতে পারবে না, আদালতের কোনো কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্য দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।  

বিবিসির প্রতিবেদন জানায়, নির্বাহী আদেশে এ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের হেগের আদালত। শুক্রবার এক বিবৃতিতে আইসিসি বলেছেন, তারা তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আছেন। ট্রাম্পের এ ধরনের আদেশ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিবৃতিতে বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচার চালিয়ে যাওয়া ও লাখ লাখ নির্দোষ ভুক্তভোগীর আশা হয়ে থাকার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এর আগে ইউক্রেন আগ্রাসনের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি। যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ১২০টি দেশ এর সদস্য হলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল সেখানে নেই। 

প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় কতটুকু ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি। আদালতের সাবেক কর্মকর্তা এরিক উইট ব্রাসেলস থেকে আলজাজিরাকে বলেন, এটা নির্ভর করছে সদস্য দেশগুলোর ওপর। তাদের অবশ্যই আইসিসির সমর্থনে এগিয়ে আসতে হবে। আইসিসি দুর্বল হলে কেবল ফিলিস্তিনিই নয়, ইউক্রেন, সুদান, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম চালানো কঠিন হবে। 

জার্মানি বলেছে, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা আইসিসিকে সমর্থন দিয়ে যাবে। আর ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান বলেছেন, কোনো ধরনের বাধা ছাড়া আইসিসিকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী দায়মুক্তির বিরুদ্ধে কাজ করতে দিতে হবে। সামাজিক মাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, আন্তর্জাতিক অপরাধের জবাবদিহির নিশ্চয়তা দেন এ আদালত। ইউরোপ সব সময় ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশে থাকবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ব নন ইসর য় ল আইস স ইসর য় ল ধরন র আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ