নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহ শুরু গত ২৮ জানুয়ারি। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে সাবিনা খাতুনদের অনুশীলন বয়কট গতকাল পর্যন্ত ছিল। সব মিলিয়ে ১১ দিন ট্রেনিংয়ের বাইরে নেপালে সাফজয়ী মেয়েরা। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গড়িয়েছে, তাতে শিগগিরই অনুশীলনে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাদের।
এই কয়েকদিন পিটার বাটলার ত্রিশের ওপর মেয়েকে নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য বাটলার স্কোয়াড চূড়ান্ত করবেন ৩৩ জনের মধ্য থেকে। যেখানে বিবেচনায় নেই বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। তার মানে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চের ম্যাচে থাকছেন না সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমারা।
অনুশীলনে না থাকায় তাদের ছুটিতে পাঠানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জটিলতা আরও বাড়ার আশঙ্কা বেশি। তবে আমিরাত সিরিজে না রাখলেও মেয়েদের একেবারে ঝেড়ে না ফেলে অপেক্ষায় রাখার কৌশলে হাঁটছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। তাদের চলমান আন্দোলন সমাধানে ধীর চলো নীতিতে এগোতে চায় দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
গত মধ্য জানুয়ারিতে সাফজয়ী খেলোয়াড়রা বাফুফে ক্যাম্পে যোগ দেন। বাটলারের পাঠানো পরিকল্পনায় দেশীয় কোচদের অধীনে অনুশীলনও চালিয়ে যান তারা। দৃশ্যপটে বাটলার আসার পরই সাবিনার নেতৃত্বে আন্দোলনে নামেন মেয়েরা। যেটি এখনও চলমান। তাদের বিদ্রোহ এমন সময় শুরু হয়েছে, যখন আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের সবকিছুই চূড়ান্ত করে ফেডারেশন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার কথা বাংলাদেশ নারী দলের।
*আমিরাত সফরে বাদ বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার
*সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ক্যাম্প থেকে বিদ্রোহী মেয়েদের ছুটি দেওয়া হতে পারে
*সিনিয়র কয়েক ফুটবলারের নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, তারাই অন্য মেয়েদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
*কোচেরও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, এই মেয়েদের মাইন্ডসেট– এই ব্যাপারে আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত
*নারী উইং আরেকটু পেশাদার হতে পারত, এই ঘটনায় তাদের ব্যর্থতা চোখে পড়েছে।
সাবিনাদের আন্দোলনের কারণে সফরটি যেন নষ্ট না হয়, তাতে তড়িঘড়ি করে অনূর্ধ্ব-২০ বয়সী ফুটবলারদের ক্যাম্পে ফেরাতে থাকে ফেডারেশন। এটা তাদের প্ল্যান ‘বি’র একটি অংশ। ২০ দিনও বাকি নেই আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ হতে; একই সঙ্গে বিদ্রোহী ফুটবলারদের সঙ্গে সমঝোতাও এখন পর্যন্ত হয়নি, তাই বাটলারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাকিদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত দল গঠন করতে।
নিজেদের এমন পরিকল্পনার কথা শুক্রবার সমকালের সঙ্গে বলেছেন বাফুফের এক কর্মকর্তা, ‘সত্যি বলতে কী বর্তমান যে পরিস্থিতি আর অনুশীলনের মধ্যে না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই এই মেয়েরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের দলে ঢুকতে পারবে না। কোনো কারণে সব ঠিক হয়ে গেল, কালকে থেকে ওরা ট্রেনিং শুরু করল, সেটা হলে অন্য কিছু হতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে এদের আরব আমিরাত দলে ঢোকা খুবই কঠিন।’
বিদ্রোহী ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন নেপালে সাফ শিরোপাজয়ী দলে। তাহলে এত অভিজ্ঞ ফুটবলারদের বাদ দিয়ে খেলাটা কতটা যৌক্তিক? ‘ওরা ট্রেনিংয়ে নেই। এই ক্ষেত্রে সভাপতিরও করার কিছু আছে বলে দেখছি না আমি।’
মেয়েদের বাদ দিলে পরিস্থিতিতে যে আরও ঘোলাটে হবে, তা বুঝতে পারছেন বাফুফে কর্তারা। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার নারী ফুটবল দলকে একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন করার পর তো কৌশল পরিবর্তন করতে হচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। বিশেষ কমিটির রিপোর্ট এখন সভাপতি তাবিথ আউয়ালের টেবিলে। তাঁর এখতিয়ার আছে এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু সামনে যেহেতু আমিরাত সফর, তাই অনেক কিছু ভেবেই এগোতে হচ্ছে ফেডারেশনকে।
বিশ্বস্ত সূত্রে যতটুকু জানা গেছে, ছুটিতে পাঠানোর আগে মেয়েদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করবে বাফুফে। তাদের বোঝানো হবে যেহেতু তারা ট্রেনিংয়ের মধ্যে নেই, আমিরাতের মতো দলের বিপক্ষে খেলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত নন তারা। তাই আমিরাত সফরে নতুনদের পরখ করে দেখবে বাফুফে। আর মেয়েদের সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়েও আলোচনার পথ উন্মুক্ত রাখবে ফেডারেশন। যেহেতু সমস্যাটা বাটলারকে ঘিরে, তাই বাফুফে চাচ্ছে আমিরাত সফর শেষ করে এ সমস্যার সুরাহা করতে। আবার এমনও হতে পারে এর আগেই কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বাফুফে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল আম র ত স পর স থ ত ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া ১০টি গরু আটক করেছিল বিএসএফ। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গরুগুলো বাংলাদেশে ফেরত দেওয়া হয়। রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে গরুগুলো বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে আখাউড়ার কালিকাপুর এলাকায় কাঁটাতারের কাছাকাছি ঘাস খাওয়ানোর জন্য স্থানীয়রা গরু চড়ান। এসময় কয়েকটি গরু ঘাস খেতে খেতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অংশে ঢুকে পড়ে। পরে বিএসএফ সদস্যরা ১০টি গরু ধরে নিয়ে গিয়ে কাঁটাতারের কাছে বেঁধে রাখেন। স্থানীয়রা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলে গরুগুলো ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘শূন্য রেখার কাছে গরু চড়ানোর কারণে সম্প্রতি প্রায়ই গরু ভারতের অংশে ঢুকে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। আজ কিছু গরু ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ায় বিএসএফ তা আটক করেছিল। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গরুগুলো ফেরত আনা হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
ঢাকা/পলাশ/রাজীব