Samakal:
2025-08-01@21:57:52 GMT

মেয়েদের অপেক্ষায় রাখার কৌশল

Published: 8th, February 2025 GMT

মেয়েদের অপেক্ষায় রাখার কৌশল

নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহ শুরু গত ২৮ জানুয়ারি। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে সাবিনা খাতুনদের অনুশীলন বয়কট গতকাল পর্যন্ত ছিল। সব মিলিয়ে ১১ দিন ট্রেনিংয়ের বাইরে নেপালে সাফজয়ী মেয়েরা। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গড়িয়েছে, তাতে শিগগিরই অনুশীলনে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাদের। 

এই কয়েকদিন পিটার বাটলার ত্রিশের ওপর মেয়েকে নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য বাটলার স্কোয়াড চূড়ান্ত করবেন ৩৩ জনের মধ্য থেকে। যেখানে বিবেচনায় নেই বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। তার মানে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চের ম্যাচে থাকছেন না সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমারা। 

অনুশীলনে না থাকায় তাদের ছুটিতে পাঠানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জটিলতা আরও বাড়ার আশঙ্কা বেশি। তবে আমিরাত সিরিজে না রাখলেও মেয়েদের একেবারে ঝেড়ে না ফেলে অপেক্ষায় রাখার কৌশলে হাঁটছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। তাদের চলমান আন্দোলন সমাধানে ধীর চলো নীতিতে এগোতে চায় দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

গত মধ্য জানুয়ারিতে সাফজয়ী খেলোয়াড়রা বাফুফে ক্যাম্পে যোগ দেন। বাটলারের পাঠানো পরিকল্পনায় দেশীয় কোচদের অধীনে অনুশীলনও চালিয়ে যান তারা। দৃশ্যপটে বাটলার আসার পরই সাবিনার নেতৃত্বে আন্দোলনে নামেন মেয়েরা। যেটি এখনও চলমান। তাদের বিদ্রোহ এমন সময় শুরু হয়েছে, যখন আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের সবকিছুই চূড়ান্ত করে ফেডারেশন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার কথা বাংলাদেশ নারী দলের। 

*আমিরাত সফরে বাদ বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার
*সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ক্যাম্প থেকে বিদ্রোহী মেয়েদের ছুটি দেওয়া হতে পারে
*সিনিয়র কয়েক ফুটবলারের নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, তারাই অন্য মেয়েদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
*কোচেরও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, এই মেয়েদের মাইন্ডসেট– এই ব্যাপারে আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত
*নারী উইং আরেকটু পেশাদার হতে পারত, এই ঘটনায় তাদের ব্যর্থতা চোখে পড়েছে।

সাবিনাদের আন্দোলনের কারণে সফরটি যেন নষ্ট না হয়, তাতে তড়িঘড়ি করে অনূর্ধ্ব-২০ বয়সী ফুটবলারদের ক্যাম্পে ফেরাতে থাকে ফেডারেশন। এটা তাদের প্ল্যান ‘বি’র একটি অংশ। ২০ দিনও বাকি নেই আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ হতে; একই সঙ্গে বিদ্রোহী ফুটবলারদের সঙ্গে সমঝোতাও এখন পর্যন্ত হয়নি, তাই বাটলারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাকিদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত দল গঠন করতে। 

নিজেদের এমন পরিকল্পনার কথা শুক্রবার সমকালের সঙ্গে বলেছেন বাফুফের এক কর্মকর্তা, ‘সত্যি বলতে কী বর্তমান যে পরিস্থিতি আর অনুশীলনের মধ্যে না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই এই মেয়েরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের দলে ঢুকতে পারবে না। কোনো কারণে সব ঠিক হয়ে গেল, কালকে থেকে ওরা ট্রেনিং শুরু করল, সেটা হলে অন্য কিছু হতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে এদের আরব আমিরাত দলে ঢোকা খুবই কঠিন।’ 

বিদ্রোহী ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন নেপালে সাফ শিরোপাজয়ী দলে। তাহলে এত অভিজ্ঞ ফুটবলারদের বাদ দিয়ে খেলাটা কতটা যৌক্তিক? ‘ওরা ট্রেনিংয়ে নেই। এই ক্ষেত্রে সভাপতিরও করার কিছু আছে বলে দেখছি না আমি।’

মেয়েদের বাদ দিলে পরিস্থিতিতে যে আরও ঘোলাটে হবে, তা বুঝতে পারছেন বাফুফে কর্তারা। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার নারী ফুটবল দলকে একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন করার পর তো কৌশল পরিবর্তন করতে হচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। বিশেষ কমিটির রিপোর্ট এখন সভাপতি তাবিথ আউয়ালের টেবিলে। তাঁর এখতিয়ার আছে এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু সামনে যেহেতু আমিরাত সফর, তাই অনেক কিছু ভেবেই এগোতে হচ্ছে ফেডারেশনকে। 

বিশ্বস্ত সূত্রে যতটুকু জানা গেছে, ছুটিতে পাঠানোর আগে মেয়েদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করবে বাফুফে। তাদের বোঝানো হবে যেহেতু তারা ট্রেনিংয়ের মধ্যে নেই, আমিরাতের মতো দলের বিপক্ষে খেলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত নন তারা। তাই আমিরাত সফরে নতুনদের পরখ করে দেখবে বাফুফে। আর মেয়েদের সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়েও আলোচনার পথ উন্মুক্ত রাখবে ফেডারেশন। যেহেতু সমস্যাটা বাটলারকে ঘিরে, তাই বাফুফে চাচ্ছে আমিরাত সফর শেষ করে এ সমস্যার সুরাহা করতে। আবার এমনও হতে পারে এর আগেই কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বাফুফে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল আম র ত স পর স থ ত ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ