কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন আর শুধু তথ্য বিশ্লেষণ, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা পাঠানো বা ই–মেইলের খসড়া লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এই প্রযুক্তি এখন মানুষের বদলে সরাসরি অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়ার ক্ষমতাও অর্জন করেছে। শুনতে অবাক লাগলেও নিজের এআই ক্লোন তৈরি করে অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে পিকল নামের একটি এআই টুল। এআই টুলটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির এআই ক্লোন তৈরি করে ভিডিও কলে মানুষের মতো কথা বলতে পারে। এমনকি অন্যদের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে।

পিকল এআই টুল নিয়ে এরই মধ্যে প্রযুক্তিবিশ্বে আলোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অদিত শেঠ নামের এক ব্যক্তি জুম কলে অংশ নিয়ে স্বাভাবিকভাবে অন্যদের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর তিনি নিজেই জানান, অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যক্তির ছবিটি আসলে তাঁর চেহারার আদলে তৈরি এআই ক্লোন।

আরও পড়ুন‘ডিপফেক’ ভিডিও কী, যেভাবে বুঝবেন এটা ভুয়া০৭ নভেম্বর ২০২৩

পিকলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি আগে ধারণ করা কোনো ভিডিও প্রচার করে না। এটি ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বর ও মুখাবয়বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনার বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে কথা বলতে এবং প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে এটি দেখে বোঝার উপায় নেই পর্দায় থাকা ব্যক্তি অনলাইন বৈঠকে উপস্থিত নেই।

আরও পড়ুনএআই দিয়ে কণ্ঠ নকল, অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা৩০ ডিসেম্বর ২০২৩

পিকলের মাধ্যমে নিজের এআই ক্লোন তৈরি করে সহজেই প্রাতিষ্ঠানিক বৈঠকের পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া সম্ভব। এর ফলে কাজে ব্যস্ত থাকার সময় অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা এআই ক্লোনের মাধ্যমে সহজেই করা যাবে।

পিকল এআই টুল সময় ব্যবস্থাপনায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করলেও এআই ক্লোনের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে। শুধু তা–ই নয়, ভবিষ্যতে কেউ নিজের পরিচয় গোপন রেখে বা অন্যের পরিচয় ব্যবহার করে এআই ক্লোন তৈরি করে অন্যদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস

আরও পড়ুনএআই দিয়ে তৈরি নিজের ছেলের নকল কণ্ঠ চিনতে পারলেন না পিতা০৪ অক্টোবর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআই ক ল ন ত র এআই ট ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ