পীরগঞ্জে সেই নারীর খণ্ডিত মাথা উদ্ধার
Published: 8th, February 2025 GMT
রংপুরের পীরগঞ্জে মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধারের এক দিন পর খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার চতরা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীরে পাকার মাথা টোংরারদহ এলাকা থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়। এতে জড়িত থাকা অভিযোগে বড় বদনাপাড়া গ্রামের আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশের এসআই অনন্ত কুমার বর্মণ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম সংবাদ সম্মেলন করে জানান, শুক্রবার সকালে বড় বদনাপাড়ায় এক নারী মরিচ উঠাতে ক্ষেতে গিয়ে মাথাবিহীন নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দেন।
সিআইডি ক্রাইম সিন দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার নাম দেলোয়ারা (৩১) বলে জানা সম্ভব হয়। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী। নীলফামারীর জলঢাকার পশ্চিম গোরমুক্তা গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের একটি দল বস্তা ও ব্যাগে ভর্তি ছবি, সিমকার্ড, কাগজে লিখিত কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর পেলে নারীর পরিচয় জানতে পারে। এক পর্যায়ে আতিকুলের গতিবিধিতে নজর রাখে তারা। শনিবার সকালে বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার পথে কাবিলপুর ইউপির ঘনশ্যামপুর সড়ক থেকে তাকে আটক করা হয়।
আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে কাটা মাথার সন্ধান মিললে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। আতিকুল এলাকায় জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত বলেও জানান তিনি। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-১৩ এর গোয়েন্দা সদস্যরাও এ বিষয়ে কাজ করছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা কমিয়েছে ভারতের পরিশোধনাগারগুলো, ছাড় কমে যাওয়ার প্রভাব
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলো গত সপ্তাহে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। গত মাসে ছাড়ের পরিমাণ কমে আসার কারণে মূলত তাদের তেল কেনা কমেছে। এ খবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
সেই সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করার সময় বলেছেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনে ভারত রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ব্যয় মেটাতে সহযোগিতা করছে। ফলে তাদের এ ২৫ শতাংশ শুল্ক দেওয়ার পাশাপাশি অনির্দিষ্ট হারে দণ্ড দিতে হবে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ভারত সমুদ্রপথে রপ্তানি হওয়া রুশ অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো, যেমন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও মাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রুশ অপরিশোধিত তেলের কোনো দরপত্র দেয়নি বলে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। এ বিষয়ে ফেডারেল তেল মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করেনি।
সূত্রগুলো জানায়, এই চার শোধনাগার নিয়মিতভাবে সরবরাহ চুক্তির ভিত্তিতে রুশ তেল কিনত; কিন্তু এখন তারা বিকল্প জোগানের জন্য স্পট মার্কেটে ঝুঁকেছে—প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবির মুরবান ক্রুড ও পশ্চিম আফ্রিকার তেল। বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এনার্জি ভারতে রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো দেশটির মোট দৈনিক ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন বা ৫২ লাখ ব্যারেল শোধনক্ষমতার ৬০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে।
গত ১৪ জুলাই ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বড় ধরনের শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানো না গেলে যেসব দেশ রুশ তেল কিনছে, সেই দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড দাবি করেছেন, তিনি ‘শুনেছেন’ ভারত রুশ তেল আমদানি বন্ধ করেছে। শুধু তা–ই নয়, এটিকে তিনি ভালো পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি কেনাবেচা বাজারের গতি–প্রকৃতি ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলো রাশিয়ান তেল আমদানি বন্ধ করেছে—এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার জানা মতে, ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না, এটা ভালো পদক্ষেপ। দেখা যাক, কী হয়।’
রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের আক্রমণের জবাবে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পাররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘জ্বালানির কেনার উৎস নির্ধারণের বিষয়ে আমাদের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে সবাই সচেতন। বাজারের সহজলভ্যতা অনুযায়ী আমরা তেল কেনার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আমাদের ধারাবাধা উৎস নেই।’
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়। পরিষ্কার জানানো হয়, রাশিয়া ভারতের অংশীদার ‘পরীক্ষিত’। এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির নিজস্ব ভিত্তি আছে। তৃতীয় দেশের লেন্স দিয়ে তা দেখা উচিত নয়।