মায়ের খণ্ডিত মাথা উদ্ধারের পর মিলল তার শিশুসন্তানের লাশ
Published: 9th, February 2025 GMT
রংপুরের পীরগঞ্জে শুক্রবার দেলোয়ারা নামে এক নারীর মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের দুদিন পর তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা সাইমার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। রোববার সকালে বড় বদনাপাড়া গ্রামের আতিকুল ইসলামের বাড়ির পেছনে গাছের বাগানে গর্তে পুঁতে রাখা হয়েছিল শিশুটির মরদেহ। পীরগঞ্জ থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত দেলোয়ারা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) আছিফা আফরোজা আদুরি।
তিনি বলেন, রেজাউল করিম পুলিশের কাছে তার মেয়ে সাইমার সন্ধান চান। তিনি জানান, তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী দেলোয়ারার সঙ্গে তার মেয়ে সাইমাও ছিল।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আতিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, দেড়মাস আগে শিশু সাইমাকে হত্যার পর লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পেছনের গাছের বাগানে গোবরের স্তুপের পাশে ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত করে পুঁতে রাখে আতিকুল। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার শিশু সায়মার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে মর্গে পাঠানো হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে বড় বদনাপাড়ায় এক নারী জমিতে মরিচ তুলতে গিয়ে মাথাবিহীন মরদেহ দেখে চিৎকার দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দেন।
সিআইডির অপরাধ অনুসন্ধান দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করে। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই অনন্ত কুমার বর্মণ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। পরদিন চতরা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীরে পাকার মাথা টোংরারদহ এলাকা থেকে দেলোয়ারার মাথা উদ্ধার হয়। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলী মণ্ডলের ছেলে আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে কাটা মাথা উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দুটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে তদন্ত চলছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি) এমএ ফারুক। আতিকুল এলাকায় জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্বজনরা দেলোয়ারার মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানালে শনিবার রাতে পুলিশের উদ্যোগে রংপুর সদরের মুন্সিপাড়া সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’