ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড়ে বন্দুকযুদ্ধে ৩১ মাওবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর দুই কমান্ডো নিহত হয়েছেন। রোববার ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে গভীর জঙ্গলে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। বিদ্রোহ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জোরদারের মধ্যেই এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।

ছত্তিশগড়কে মাওবাদী বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল মনে করা হয়। কয়েক দশকের এই বিদ্রোহে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বিদ্রোহীদের দাবি, প্রান্তিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য তাঁরা লড়াই করছেন।

জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি বলেন, ৩১ বিদ্রোহী ও নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর আরও দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য পৌঁছেছেন বলেও জানান তিনি।

এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গ্রেনেড লঞ্চার উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অভিযানের প্রশংসা করে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নকশালমুক্ত ভারত অর্জনের পথে এটি বড় সাফল্য। গত বছর তিনি ২০২৬ সালের মধ্যেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমন করার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন।

সরকারি নথি অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে গত বছর ২৮৭ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছত্তিশগড়ের।

মাওবাদীরা ভূমি ও চাকরি এবং ওই অঞ্চলের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে স্থানীয় বাসিন্দাদের মালিকানা দাবি করে আসছে। ভারতের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায়ও নিজেদের অবস্থান তৈরি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। ২০০০-এর দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত এই আন্দোলন শক্তিশালী ছিল এবং তাদের অনেক সদস্য ছিল।

‘রেড করিডর’ হিসেবে পরিচিত এসব এলাকায় হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে নয়াদিল্লি। এই সংঘাতে সরকারি বাহিনীর ওপর অনেক প্রাণঘাতী হামলার ঘটনাও ঘটেছে। গত মাসে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে নয়জন ভারতী সেনা নিহত হন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ