হাসিনার পাতা ফাঁদে আমরা যেন পা না দিই: মির্জা ফখরুল
Published: 9th, February 2025 GMT
শেখ হাসিনার পাতা ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে। অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিম (শাসনামল) দায়ী। একটা অন্ধকারকে আরেকটা অন্ধকার দিয়ে দূর করা যায় না। আলো দিয়ে দূর করতে হয়। সেই আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে সামনের দিকে যেতে হবে।
আজ রোববার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে উৎখাতের জন্য একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়.
বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে, ধীরে ধীরে এগোতে হবে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা রক্ষা ও ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
দেশজুড়ে যৌথ বাহিনীর চলামন অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো বাইরে ছিলাম, ডেভিল হান্ট জানি না। তবে ডেভিল হান্ট মানে ফ্যাসিস্ট সরকারকে জানি। এত দিন পর বোধোদয় হয়েছে, সে জন্য ধন্যবাদ (অন্তর্বর্তী সরকারকে) জানাচ্ছি।’
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ম্যাডাম ভালো আছেন। ট্রিটমেন্ট (চিকিৎসা) চলছে।’
‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’–এ অংশ নিতে ২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে যান মির্জা ফখরুল। এই সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ওই আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জায়মা জারনাজ রহমান।
এই সফর সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, যে উদ্দেশ্যে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, সেটা সফল হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।