সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৃহত্তম নগর দুবাইয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশ নেবে।

আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে এ তথ‌্য জানান।

রফিকুল আলম জানান, ১১-১৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনে অংশ নিতে আমিরাতের উপ–রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক আমির শাইখ মুহাম্মাদ বিন রাশিদ আল মাখতুম গত ১৩ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টাকে একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে সম্মতি দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র জানান, এবারের সম্মেলন সরকারগুলোর মধ্যে কার্যকর অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক মতবিনিময় এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার ও জনগণের মধ্যকার সেতুবন্ধ সৃষ্টিতে প্ল্যাটফর্মটির উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে। প্রধান উপদেষ্টার সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে তাঁর চিন্তা এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে।

সফরকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

রফিকুল আলম বলেন, বন্ধুপ্রতিম দুটি দেশ বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং অভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে এ সম্পর্ক ক্রমে সুসংহত হয়েছে। দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

এ ছাড়া টেক্সটাইল, কৃষিপণ্য এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও ক্রমবর্ধমান বলে উল্লেখ করেন রফিকুল আলম। তিনি বলেন, উভয় দেশ জাতিসংঘ ও ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করছে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশের অবকাঠামো, স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিয়মিতভাবে বিনিয়োগ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ