স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর ‘কবির মৃত্যু’
Published: 9th, February 2025 GMT
‘যুগ যুগ ধরে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আদৌ কি মানুষের কথা বলার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে? কেবল কথা বলার অধিকার পেতেই পৃথিবীজুড়ে খোয়া গেছে অগণিত মানুষের প্রাণ। সম্পদ ও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখা শাসকশ্রেণি বরাবরই মানুষের কথা বলার অধিকারকে দমিয়ে রেখেছে। কেননা তারা বেশ ভালো করেই জানে যে মানুষের কথা বলার অধিকার নিশ্চিত হলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে তাদের ক্ষমতাবলয়। কিন্তু মানুষ কি আদৌ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়? নেয় না বোধ হয়। তাই হয়তো সব দেশের সব যুগের ইতিহাসেই শাসক ও শোষিত এই দুই শ্রেণির উপস্থিতি যুগপৎ।
‘১৯৩৬ সালের ১৯ আগস্ট সত্য উচ্চারণের জন্য কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোর্কাকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল স্পেনের স্বৈরশাসকের হাতে। ফ্রাঙ্কো বাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁজরা হয়েছে তাঁর শরীর, অথচ তাঁর কণ্ঠস্বর স্পেনের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে। তাঁর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে পৃথিবীর আপামর শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর। তাঁরই স্মরণে কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন এই কবিতা, “কবির মৃত্যু”। আমাদের এই গান মূলত তৈরি হয়েছে সুনীলের সেই কবিতাকে কেন্দ্র করেই।
‘গানটি এ সময় আত্মপ্রকাশ করলেও এর জাল বুনতে শুরু করেছিলাম ২০১৪ সালের কোনো এক সময় থেকে। করপোরেট জীবনের পাশাপাশি পুরো চিত্রপটটি কথায় ও সুরে গুছিয়ে আনতে সময় লেগেছিল বহু বছর, এবার মূল সংকটে পড়ি গানটিকে মিউজিক্যাল কম্পোজিশনে আনতে!
‘কবির মৃত্যু’ গানের পোস্টার। ব্যান্ডের সৌজন্যে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’